Monday 13 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হস্তান্তর প্রতিরোধের আহ্বান বামজোটের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৩৫ | আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ২১:২৮

চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষায় রোডমার্চ। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার এখতিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আছে কী না, এ প্রশ্ন তুলেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। একইসঙ্গে ‘বিদেশি কোম্পানির স্বার্থে’ চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ (মাশুল) বাড়ানো এবং প্রতিবাদ ঠেকাতে বন্দর এলাকায় সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদ জানিয়েছেন জোটের নেতারা।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) চট্টগ্রামে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক সভায় ‘দেশবিরোধী চক্রান্তের’ বিরুদ্ধে সকল দেশপ্রেমিক জনগণকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। নগরীর হাজারী লেইনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কার্যালয়ে এ সভা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সভায় বামজোটের নেতারা বলেন, ‘নিজেদের সক্ষমতা থাকার পরও চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন। বামপন্থী ও প্রগতিশীলদের নেতৃত্বে ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ ঢাকা-চট্রগ্রাম রোডমার্চ করেছে। বন্দরের পরিচালনা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমতকে প্রভাবিত করতে না পেরে প্রধান উপদেষ্টা বিরোধিতাকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখন একমাসের জন্য বন্দর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে অসম চুক্তির গোপন অপতৎপরতাকে সরকার নির্বিঘ্ন করতে চায়।’

সরকারের ‘ফ্যাসিস্ট কায়দায় সিদ্ধান্ত’ নিচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘সরকার এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সংবিধান রক্ষিত মৌলিক অধিকার এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ফ্যাসিস্ট এ সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলের দুঃসহ সময়কালকেই মনে করিয়ে দেয়।’

বাম নেতারা বলেন, ‘বামজোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারী, ব্যবসায়ী, বন্দর ব্যবহারকারী কারও আপত্তি গ্রাহ্য না করে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে বিদেশী অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি করার এখতিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কে দিয়েছে ? দেশের কারও কথা সরকার শুনছে না, তাহলে কাদের পরামর্শে ও স্বার্থে সরকার কাজ করছে ? সরকারের দেশবিরোধী এ চক্রান্ত রুখে দিতে আমরা চট্টগ্রামসহ সারাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণকে আহবান জানাই। সরকারের এ দেশবিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানাই।’

বন্দরের বিভিন্ন সেবাখাতে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে জোট নেতারা বলেন, ‘ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও এবং চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক হওয়ার পরও বিদেশি কোম্পানির স্বার্থে বন্দরের মাশুল ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে সরকার। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের ব্যয় তিনগুণ বেড়ে যাবে। বর্ধিত ট্যারিফে লাভবান হবে ডিপিওয়ার্ল্ড, এপিএম টার্মিনালস, পিএসএ ইন্টারন্যাশনালের মতো বিদেশি টার্মিনাল অপারেটররা, যাদের কাছে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনাল ইজারা দেওয়া হচ্ছে। বিপরীতে দেশে আমদানি-রফতানির খরচ বহুগুণ বাড়বে।’

‘বর্ধিত খরচের বোঝা টানতে গিয়ে দেশিয় শিল্প-কৃষি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শেষপর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির বোঝা টানতে হবে। প্রশ্ন হলো, কার স্বার্থে সরকার এ ধরনের জনবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে ? কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচিত সরকার আসার আগে তড়িঘড়ি করে মাশুল বাড়ানোর ক্ষমতা সরকারকে কে দিল ? আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, বন্দরের বর্ধিত মাশুল প্রত্যাহার করতে হবে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির আবিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, বাসদ জেলা ইনচার্জ আল কাদেরি জয় ও সদস্য আহমেদ জসিম, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সদস্য আসমা আক্তার ও জাহেদুন্নবী কনক।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর