চট্টগ্রাম ব্যুরো: বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা কিংবা বিশৃঙ্খলা-অনিয়মের অভিযোগ ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন ভোট গণনার প্রস্তুতি চলছে। তবে ভোটগ্রহণ শেষে প্রতিদ্বন্দ্বী একটি প্যানেল সুনির্দিষ্ট ১৪টি অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টায় নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাঁচটি অনুষদ ভবনে স্থাপিত বুথে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তবে সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করে একেবারে ভোট ব্যালট বক্সে নেওয়া শুরু হতে আধাঘন্টা দেরি হয়। সে হিসেবে, সকাল সাড়ে ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। যদিও বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কথা, কিন্তু লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের সুযোগ করে দিতে নির্বাচন কমিশন আধাঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দেয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. মনির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশে শেষ হয়েছে। কেন্দ্র থেকে ব্যালটগুলো পৃথক করে ডিন কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ক্যামেরার সামনে ভোট গণনা করা হবে।
ভোট গণনার স্ক্যানিং হবে ইমেজ আকারে। সেই ইমেজকে দুইটা প্যারালাল স্ক্যানিং করা হবে। নির্বাচনে দায়িত্ব প্রাপ্তরা ভোট গণনা করবেন, তাদের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের প্রোগ্রামার আলাদাভাবে গণনা করবেন। দুটি মিলে গেলে ভোটের ফল প্রকাশ করা হবে।
এদিকে ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্টের প্রার্থীরা অমোচনীয় কালি, প্রিজাইডিং অফিসারের সই ছাড়া ব্যালট বক্স কেন্দ্রে নেওয়া ও বুথে একইভাবে ব্যালট পেপার দেওয়া, ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করেন। ভোটগ্রহণের শেষমুহূর্তে বাণিজ্য অনুষদ ভবনে লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের মাঝে প্রচারের টোকেন বিলি নিয়ে উত্তেজনা ও হাতাহাতি হয়।
তবে এর বাইরে নির্বাচন ছিল উৎসবমুখর এবং শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখা গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও ভোটগ্রহণ নিয়ে বড় ধরনের কোনো অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এদিকে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্ট সমর্থিত ‘রেভ্যুলেশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি’ প্যানেল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। বিকেল ৫ টায় চাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় প্যানেলটির ভিপি প্রার্থী কেফায়েত উল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে কেফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের অসঙ্গতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে ১৪টি অভিযোগ জমা দিয়েছি। পাঁচটি অনুষদ ভবনের কেন্দ্রেই ভোটেগ্রহণে নানা অসঙ্গতি ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তাই আমরা অফিসিয়ালি এই নির্বাচনের ভোট বর্জন ঘোষণা করলাম।’