Saturday 18 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাঠজুড়ে শীতের সবজি, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৫০ কোটি টাকার

আবদুর রহমান টুলু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১০:৫৪

বগুড়ার মাঠজুড়ে শীতের আগাম সবজি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া: প্রকৃতিতে হেমন্ত শুরু হয়েছে। এর পরের ঋতুই শীত। এরই মধ্যে শীতের আগাম সবজির চাষ শুরু হয়েছে। বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় এখন শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। তবে গেল শরতে বৃষ্টির প্রভাব থাকায় সবজি চাষ কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। অল্প সময়ে কম খরচে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমাটো, শিম, মুলা, পালংশাকসহ শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে ভালো দাম পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় এবারও সবজির ভালো উৎপাদন হবে। চলতি মৌসুমে জেলায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষে জমির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর। এ পর্যন্ত চাষ হয়েছে ২ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। অক্টোবরের শেষের দিকে লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এবার প্রতিকেজি সবজির উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ২৭-২৯ টাকা। আর হেক্টরপ্রতি ফলন ধরা হয়েছে সাড়ে ১৭ মেট্রিকটন।

বিজ্ঞাপন

প্রতি কেজি সবজির গড় মূল্য ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ধরলে এবার জেলায় দেড়শ কোটি টাকার বেশি শীতকালীন সবজি উৎপাদন হবে। বগুড়া সদর, শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর, শেরপুর, ধুনট, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, গাবতলী ও কাহালুসহ অন্যান্য উপজেলায় আগাম সবজির চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ সব এলাকায় বাম্পার ফলন হবে। যদিও ছাড়া আগাম শীতকালীন সবজির মধ্যে পালং শাক, মুলা, গাঁজর ও শিম বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে।

বগুড়ার মাঠজুড়ে শীতের আগাম সবজি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার মাঠজুড়ে শীতের আগাম সবজি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়াকে এমনিতেই দেশের সবজি ভাণ্ডার বলা হয়ে থাকে। এই জেলায় শীতকালীন প্রচুর সবজি চাষ হয়ে থাকে। শীত আসার আগে স্থানীয় চাষীরা আগামজাতের সবজি চাষ করে থাকেন। কারণ, আগামজাতের সবজিতে বেশি লাভবান হওয়া যায়। জেলার উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে তারা জমিতে হাল চাষ, চারা রোপন, ক্ষেতে পানি ও ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কেউ কেউ খেত থেকে সবজি তুলে বিক্রির জন্য বাজারে নিচ্ছেন। অনেকে আবার নতুন করে শীতকালীন সবজির চারা রোপণেও ব্যস্ত। বাণিজ্যিকভাবেও চাষ হচ্ছে এসব সবজি।

সরেজমিনে দেখা যায়, সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি বিভিন্ন জাতের সবজি। এসবের মধ্যে রয়েছে- ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, মুলা, পালং ও লালশাকসহ হরেক রকমের শীতকালীন সবজি। কৃষকদের সবজি চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এতে কৃষকেরা বেশ উৎফুল্ল। কারণ, এবার তারা উৎপাদিত ফসলের ভালো ফলন ও ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছেন।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, আবহাওয়া কিছুটা বৈরী হওয়ায় এবার শীতকালীন আগাম সবজি চাষে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরেও স্বল্প সময়ে শীতকালীন সবজি আগাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা। বিঘাপ্রতি সবজি উৎপাদনে যে খরচ, মাঠ থেকেই তার প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়। আর স্বল্প সময়েই বিপণ করা যায় বলে এসব সবজি চাষে ঝুঁকছেন তারা।

বগুড়া সদরের পীরগাছা এলাকার কৃষক আমিনুর প্রামানিক সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে জানান, সারাবছরই তিনি বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন করে থাকেন। শীতকালীন আগাম সবজির মধ্যে- ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, মুলা, পালংশাক ও ধনেপাতার আবাদ করেছেন। বাজারে প্রতিটি সবজিরই ব্যাপক চাহিদার সঙ্গে ভালো দামও পাচ্ছেন।

বগুড়া কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান ফরিদ সারাবাংলাকে জানান, গতবছরের তুলনায় এবার শরৎকালে বৃষ্টি কিছুটা বেশি হয়েছে। এতে খরিপ-২ মৌসুমে সবজি চাষে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, ‘আগাম জাতের সবজি চাষে অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর