কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় আখড়াবাড়িতে আজ শেষ হচ্ছে তিনদিনের তিরোধান দিবস। আধ্যাত্মিক সাধক ও বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে এ সাধুসঙ্গ এবারই প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে রাখাল সেবা ও রাতে অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাধুসঙ্গ। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে বাল্যসেবা ও দুপুরে পূর্ণসেবার মধ্য দিয়ে মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও আজ রাতে লালন মঞ্চে গানের মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত হবে তিন দিনের এই উৎসব।
গতকাল থেকেই গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে আখড়াবাড়ি ছেড়ে যেতে শুরু করেন সাধু-বাউলরা। তবে বিদায়ের মাঝেও থেকে গেছে আবার মিলিত হওয়ার প্রতিশ্রুতি।
যদিও সাধুসঙ্গ শেষ হয়েছে, লালন মেলায় রাতে চলবে আলোচনা সভা ও গান। এজন্য অনেক সাধু-বাউল এখনো রয়ে গেছেন আখড়াবাড়িতেই, সাঁইজির সান্নিধ্যে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লালনদর্শনে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে, তাই এবারের আয়োজনে ছিলো আগের চেয়ে বেশি ভিড়।
দর্শনার্থীরা বলছেন, দিন দিন ছড়িয়ে পড়ছে লালনের অহিংস ও মানবতাবাদী দর্শন। তরুণ প্রজন্মের মাঝেও তার গান ও ভাবধারার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন জানান, এ আয়োজন শুধু আধ্যাত্মিক নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও প্রতীক। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে।
উল্লেখ্য, ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিকে দেহত্যাগ করেন ফকির লালন সাঁই। সেই থেকে প্রতিবছর এই সময় ভক্ত ও অনুসারীরা পালন করে আসছেন সাধুসঙ্গ ও স্মরণোৎসব।
আজও সেই ঐতিহ্য ধরে রেখে বিদায়ের গান গেয়ে ফিরে যাচ্ছেন সাধু-বাউলরা। রেখে যাচ্ছেন লালনের ভালোবাসা, মানবতার বার্তা আর চিরন্তন দর্শন।