নোয়াখালী: নোয়াখালী সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজারে শিবির ও যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, শনিবার কাশেম বাজারের একটি মসজিদে শিবিরের কোরআন তালিম ও ফরম পুরণের কাজ চলছিল। সেখানে স্থানীয় যুবদলের কিছু নেতাকর্মী গিয়ে জামায়াত নেতা সেলিম বিগত সময় আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় ছিল উল্লেখ করে তাকে নিয়ে শিবিরের কার্যক্রম না করার অনুরোধ জানান। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তারই প্রতিবাদে রবিবার একই স্থানে প্রতিবাদ সভা ও পুনরায় কুরআন তালিমের আয়োজন করে স্থানীয় শিবির। এক পর্যায়ে আবারও কাশেম বাজার জামে মসজিদে গিয়ে বাধা দেয় যুবদলের নেতারা। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ-সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান বলেন, গত ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা সেলিমের নেতৃত্বে মসজিদে ঢুকে ফরম ফিলআপ করেছে শিবির। এ সময় যুবদলের নেতাকর্মীরা মসজিদে রাজনৈতিক কার্যক্রম না করার জন্য অনুরোধ করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। তারই জের ধরে রবিবার শিবিরের নেতৃত্বে জেলা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে পুনরায় সেখানে সভা ডাকে এবং আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বাজে স্লোগান দেয়। এসময় তাদেরকে নিবৃত থাকতে বললে তারা যুবদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে নেওয়াজপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ফারুক, যুবদল নেতা রায়হান, জিয়াসহ ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী মারাত্বক আহত হয়।
তিনি দাবি করেন, শিবিরের নেতাকর্মীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জেলা শহর থেকে গিয়ে সেখানে এ হামলা চালিয়েছে।
এদিকে শিবিরের শহর শাখার প্রচার সম্পাদক কেএম ফজলে রাব্বি জানান, শিবিরের উদ্যোগে শনিবার কাশেম বাজার মসজিদে কোরআন তালিম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে স্থানীয় যুবদল নেতা ফারুকের নেতৃত্বে হামলা করা হয়। এক পর্যায়ে শনিবার কুরআন তালিম করা যায়নি। পরে আজ রোববার পুনরায় সেখানে কোরআন তালিমের আয়োজন করা হয়। আজও ফারুকের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে হাসান, দেলওয়ার হোসেন মিশু, আবিদ, সালা উদ্দিনসহ ৩০জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়।
এ বিষয়ে নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অবস্) মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, দুই পক্ষের মধ্যে বিকালে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তিনিসহ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।