রংপুর: দাদির কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে নাতি অনিক হাসান হৃদয়। মর্মান্তিক এ ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মন্তাজ আলীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় সে।
সে জানায়, অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে ১০ হাজার টাকা চেয়েছিল দাদির কাছে। না পেয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার খেদমতপুর ইউনিয়নের বড় মজিদপুর ঘেগারতল গ্রামে।
নিহত আকলিমা বেগম (৬৫) ওই এলাকার আব্দুল হাকিম মিয়ার স্ত্রী।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে তার গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর অভিযুক্ত হৃদয় (১৯) বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে রোববার ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে। সকালে প্রতিবেশীরা ঘর থেকে রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার দিন সকালে হৃদয়ের পালিয়ে যাওয়ার সংবাদ শোনার পর তার প্রতি সন্দেহ বাড়ে। ওই দিনই নিহতের ভাই ওবায়দুল হক অজ্ঞাতনামা আসামি করে পীরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় হৃদয়কে গ্রেফতার করেন। তিনি বড়ঘোলা গ্রামের রাশেদুল ইসলামের ছেলে। গ্রেফতারের পর তার তথ্যমতে সোমবার সকালে বড় মজিদপুরের রফিকুলের পরিত্যক্ত রাইস মিল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।
পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত ১টার দিকে হৃদয় ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনের বাসে খেদমতপুরে নামে। রাতেই দাদি-দাদার বাড়িতে যায়। রাতের খাবারের পর খোশগল্পের একপর্যায়ে তর্কে জড়িয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে দাদির গলা কেটে পালিয়ে যায়।
নিহতের ছেলে রাশেদুল ও শাহিন জানান, ৮-১০ বছর আগে বড় মজিদপুরে পৃথক বাড়ি নির্মাণ করে বাবা-মা সেখানে বসবাস করতেন। তারা দুই ভাই বড়ঘোলায় বাস্তুভিটায় থাকেন। শনিবার ভোরে বাবা আব্দুল হাকিম ঘুম থেকে উঠে বাইরে এলে স্ত্রীর ঘরের দরজা খোলা দেখেন। ভেতরে প্রবেশ করে গলাকাটা অবস্থায় স্ত্রীর নিথর দেহ দেখে চিৎকার করেন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন।
ওসি আরও জানান, হৃদয়কে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।