ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী আনন্দ বাজারের বাঁশ বাজার এলাকায় দোকান ইজারা বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। দুপুরে শহরের প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
আনন্দ বাজার, টান বাজার, জগৎ বাজার, সড়ক বাজার, নিউ মার্কেট, চাউল বাজার ও সবজি বাজারের শত শত ব্যবসায়ী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন এবং মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আনন্দ বাজার মাছ ও শুঁটকি মহালের সভাপতি মো. খলিলুর রহমান। বক্তব্য দেন মহালের সাধারণ সম্পাদক মো. মুত্তাকিম, যুগ্ম সম্পাদক আবুল হাসনাত ভজন, টানবাজার ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান, সড়ক বাজারের ব্যবসায়ী আশিষ পাল এবং সবজি ও চাল মহালের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. কালাম, জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক মো. মেরাজ।
বক্তারা বলেন, আনন্দ বাজার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী একটি বাজার। বাজারের পুরাতন বাঁশ বাজার এলাকায় প্রায় ২১ শতাংশ খাস জমি রয়েছে, যা কয়েক বছর আগে শহরের মেড্ডা শশানঘাট এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসনের মৌখিক অনুমতিতে যানজট এড়ানোর জন্য বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা ওই এলাকায় মালামাল লোড-আনলোডের কাজ চালিয়ে আসছেন। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এটি তাদের একমাত্র সুবিধাজনক স্থান।
তারা আরও জানান, পূর্বে পৌরসভার কাছে স্থায়ীভাবে মালামাল লোড-আনলোডের জন্য অনুমোদনের আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি ওই ২০.৯৪ শতাংশ খাস জমি ৩৩ ব্যক্তির নামে বন্দোবস্ত (ইজারা) দেওয়া হয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে।
ব্যবসায়ীরা দাবি জানান, জনস্বার্থে দ্রুত সময়ের মধ্যে ইজারা বাতিল করতে হবে, না হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনের পথে যাবেন তারা।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া বলেন, ‘খাস খতিয়ানের জায়গাটি ৩৩ জনের নামে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’
জেলা প্রশাসক মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘বাজার শ্রেণির পেরিফেরিভুক্ত সরকারি খাস জায়গাটি সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। হাট-বাজারের জায়গা ট্রাক রাখার জন্য বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের সাইনবোর্ড ভাঙচুরের ঘটনায় ইউএনওকে মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’