ঢাকা: ছুটির দিন শুক্রবারেও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে। যানবাহনের সংখ্যা কমে যাওয়া ও অধিকাংশ কারখানা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও রাজধানীর বায়ুতে দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের বায়ুমান সূচক অনুযায়ী সকাল সোয়া ৮টার দিকে ঢাকার গড় বায়ুমান (AQI) ছিল ১৫৮, যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত। বিশ্বের ১২৭টি নগরের মধ্যে আজ সকালে ঢাকার অবস্থান ষষ্ঠ।
নগরীর সাতটি এলাকায় বায়ুর মান রাজধানীর গড় মানের চেয়েও খারাপ। এর মধ্যে সবচেয়ে দূষিত এলাকা মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিং, যেখানে সূচক স্কোর ১৯০। অন্য এলাকা সমূহ হলো—
দক্ষিণ পল্লবী (১৮০)
কল্যাণপুর (১৭৭)
বে’জ এজ ওয়াটার (১৬০)
শান্তা ফোরাম (১৫৯)
পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ি (১৫৩)
গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এলাকা (১৫৩)
আইকিউএয়ারের পরামর্শ অনুযায়ী, অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরা, জানালা বন্ধ রাখা এবং বাইরের ব্যায়াম এড়িয়ে চলা জরুরি। যেসব এলাকায় AQI স্কোর বেশি, সেখানে বাচ্চা, বৃদ্ধ ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ির বাইরে যাওয়া কমানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট (ইপিআইসি)–এর ‘এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স (AQLI) ২০২৫’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু সাড়ে পাঁচ বছর কমে যাচ্ছে। বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে চিহ্নিত করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
এছাড়া, বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালিসিস (CEA)’ ২০২৪ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে দূষণজনিত কারণে দুই লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু ঘটে। এর মধ্যে ৫৫ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে বায়ুদূষণের কারণে। একই বছরে দূষণের ফলে দেশের জিডিপির ১৭ দশমিক ছয় শতাংশ সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
আজকের বিশ্বে বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার স্কোর ৩৩৫। ঢাকাসহ দক্ষিণ এশিয়ার বড় শহরগুলো নিয়মিতভাবেই এই সূচকে শীর্ষে অবস্থান করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যানবাহনের ধোঁয়া, নির্মাণকাজের ধুলাবালি, ইটভাটা ও শিল্পকারখানার নির্গমন কমাতে না পারলে এই দূষণ থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করা কঠিন হবে।