Monday 27 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নির্বাচন চায় বিএনপি: আমীর খসরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ অক্টোবর ২০২৫ ২১:১০ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ২২:২৮

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারের কিছু ব্যক্তির ওপর জনগণের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে, যা নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে বড় বাধা। এ অবস্থায় নির্বাচনের আগে সরকারের কাঠামো পরিবর্তন করে একটি নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়কধারার প্রশাসন গঠন অপরিহার্য।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীর হোটেল সারিনাতে সফররত কমনওয়েলথ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, বৈঠকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কমনওয়েলথ প্রতিনিধিরা জানতে চেয়েছেন, আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কিনা।

আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের স্বার্থে কমনওয়েলথ একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। আমরা তাদের জানিয়েছি, দেশের জনগণ একটি নিরপেক্ষ ও জবাবদিহিমূলক সরকারের অধীনেই ভোট দিতে চায়। সরকারের বর্তমান কাঠামোর প্রতি মানুষের আস্থা কমে গেছে, তাই আস্থা ফিরিয়ে আনতে তত্ত্বাবধায়কধারার ব্যবস্থা প্রয়োজন।’

বৈঠকে আরও আলোচনা হয় নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ও স্বাধীনতা নিয়ে। বিএনপির মতে, সরকার তত্ত্বাবধায়ক ধাঁচে পরিচালিত হলেও নির্বাচনের সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকা উচিত। এ ছাড়া নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি জানান, বৈঠকে তত্ত্বাবধায়কধারার সরকার কীভাবে কাজ করবে, সেটি নিয়েও বিশদ আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থাপিত আস্থার ঘাটতি দূর করার উপায়, প্রশাসনের ভূমিকা, এবং নির্বাচনকালীন সময়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনা নিয়েও মতবিনিময় হয়।

এ সময় কমনওয়েলথ প্রতিনিধিরা জানান, তারা গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী। নির্বাচনে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে তারা পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপি এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণে তাদের সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করে।

বৈঠকে ‘জুলাই চার্টার’ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও আলোচনায় আসে। বিএনপি প্রতিনিধি দল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তি ও ভিন্নমতগুলো নথিভুক্ত করে তা সর্বসাধারণের কাছে প্রকাশ করার আহ্বান জানায়, যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পায়।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে বনানীর হোটেল সারিনাতে বৈঠক শুরু হয়ে প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। বৈঠকে কমনওয়েলথের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ‘ইলেকটোরাল সাপোর্ট’ শাখার উপদেষ্টা ও ‘প্রি-ইলেকশন অ্যাসেসমেন্ট’ প্রধান লিনফোর্ড অ্যান্ড্রুজ। বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর