Tuesday 28 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাবি অধ্যাপকের ‘কটুক্তিকর’ মন্তব্যের শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

রাবি করেসপন্ডেন্ট
২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৫৮ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:০৫

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগ বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)-এর প্রতিনিধিরা।

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুনের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে তার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগ বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)-এর প্রতিনিধিরা।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন তারা।

স্মারক লিপিতে তারা বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) হিসেবে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ যে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. আ. আল মামুন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক পোস্টে রাকসু নির্বাচনে হল সংসদে বিজয়ী নারী প্রতিনিধিদের ব্যক্তিগত পোশাক, নারীর ধর্মীয় পরিচয় এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সম্পর্কে অবমাননাকর ও বিদ্বেষপ্রবণ মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি তিনি পূর্বের পোস্টগুলোতে ‘বোরকা, ‘কাঠমোল্লা,, ‘মদ, ‘সেক্সুয়াল রেভল্যুশন, ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে উস্কানিমূলক কনটেন্ট দিয়েছেন ও এক পোস্টে টু-কোয়াটার ও মদের বোতল হাতে নিয়ে ক্লাসে আসার এবং একটি ছাত্রসংগঠন ও সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা স্পষ্টতই উস্কানিমূলক এবং শিক্ষাঙ্গনের নৈতিক মান ও পেশাগত দায়িত্ববোধের গুরুতর লঙ্ঘন।’

বিজ্ঞাপন

উপরোক্ত পরিস্থিতিতে রাকসু-এর বিবৃতি নিম্নরূপ:

১) একজন শিক্ষক হিসেবে ড. আ. আল মামুনের এই মন্তব্য শুধুই ব্যক্তিগত মতামত নয়; এটি শিক্ষাঙ্গনের মর্যাদা, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা-আত্মবিশ্বাস এবং শিক্ষকের দায়িত্ববোধকে চ্যালেঞ্জ করছে।

২) তিনি নারীর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, ধর্মীয় অনুশাসন ও পোশাককে ব্যঙ্গ করে যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন, তা হিজাব-ফোবিয়া এবং নারীবিদ্বেষী মনোভাবে উৎসাহ যোগায়; যা কোনো শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনুরুপ নয়।

৩) রাকসু-এর দৃঢ় অবস্থান হলো’নারীর পোশাকের স্বাধীনতা, হিজাব ও নিকাব কোনো অপরাধ নয় এবং তা পশ্চাৎপদতার চিহ্নও নয়; বরং এটি একজন নারীর নিজস্ব পরিচয়, বিশ্বাস, আত্মমর্যাদা ও শালীনতার প্রতিফলন।

৪) একজন শিক্ষক বা নাগরিকের নৈতিক অধিকার নয় কোনো ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাস বা পোশাককে ব্যঙ্গ করা। এধরনের মন্তব্য ধর্মীয় বিদ্বেষ উসকে দেওয়া এবং শিক্ষকের শপথভঙ্গের সমতুল্য।

আরও পড়ুন: অধ্যাপকের ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের জেরে মধ্যরাতে বিক্ষোভে উত্তাল রাবি

এ সময় তারা কয়েকটি দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো:

১. ড. আ-আল মামুনকে জনসম্মুখে তার এই অবমাননাকর ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

২. ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হোক এবং তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী শিক্ষকতার শপথ, কর্মসংস্কৃতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা লঙ্ঘনের অপরাধে যথাযোগ্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

৩. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন এই ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মানসিকতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে তার সার্বিক নীতি ও নির্দেশনা অবিলম্বে ঘোষণা করা হোক।

৪. ভবিষ্যতে যেন কোনো শিক্ষক বা কর্মরত ব্যক্তি শিক্ষার্থীর ধর্মীয় পরিচয়, পোশাক বা ব্যক্তিগত বিশ্বাস নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করতে না পারেন’এই উদ্দেশ্যে সতর্কতামূলক ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সহিষ্ণুতা, সাম্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জোরদার করার লক্ষ্যে যথোপযুক্ত সেমিনার/ওরিয়েন্টেশন/বড়দিন কর্মসূচি গ্রহণ করা হোক।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর