ময়মনসিংহ: মাওলানা আব্দুল হকের আধিপত্যবাদ এবং পরিবারতন্ত্রে জিম্মি হয়ে পড়েছে ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ফয়জুর রহমান বড় মসজিদ ও মাদরাসা বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ করায় মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দিয়ে হামলা, অবরুদ্ধ করে শিক্ষককের ওপর আঘাত, জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা, প্রশাসন নিয়ে কটুক্তিসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এসব ঘটনায় বিব্রত জেলা প্রশাসন, স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতসহ সব দলের রাজনীতিকরা। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন সকলেই।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাতে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বড় মসজিদ ও মাদরাসায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে এক মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানানো হয়।
স্থানীয় গণ্যমান্য আলেম-উলামাসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আলেম-উলামাসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতিতে এই সভা শুরু হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বিগত প্রায় এক বছর ধরে চলা জামিয়া ফয়জুর রহমান বড় মসজিদ ও মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা আব্দুল হকের আধিপত্যবাদসহ চলমান সকল ঘটনার বিষয়ে পর্যায়ক্রমে বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেইসঙ্গে শান্তি বজায়ে রেখে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করেন।
কিন্তু বিষয়টি র্স্পশকাতর ধর্মীয় স্থান হওয়ায় এবং ঘটনার সঙ্গে মাদরাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জড়িত থাকায় বিষয়টি নিয়ে বিব্রতবোধ করেন উপস্থিত অনেকেই। তবে সভার একপর্যায়ে প্রশাসনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বক্তব্য দেন জেলা নেজামে ইসলাম পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শরীফুর রহমান।
তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বৃহত্তর ময়মনসিংহের অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন ইত্তেফাকুল উলামা সভাপতি মুফতি মহিবুল্লাহ বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে আমরা বিব্রত। বারবার চেষ্টা করেও ঘটনার সামাধান করা যাচ্ছে না, এটা মেনে নেওয়া যায় না। আশা করছি স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ আলেমদের পরামর্শে বড় মসজিদ ও মাদরাসার স্থায়ী সামাধান করা হবে।’
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকনসহ খেলাফত মজলিশ, ইসলামী শাসনতন্ত্র, ইসলামী আন্দোলন, সাংবাদিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরা।
উল্লেখ্য, গত ২৭ অক্টোবর রাতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মাদরাসায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুইটি পক্ষের বৈঠকের পর হঠাৎ উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এ সময় মাওলানা আব্দুল হকের অনুসারীদের হামলায় শিক্ষক হাফেজ মো. শহীদুল্লাহ (৫৫) আহত হন। এ ঘটনায় পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাকর হয়ে উঠলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের হস্থক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।