Wednesday 29 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ঐকমত্য কমিশন জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রতারণা করেছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:০৬ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৪৬

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা: সরকারে কাছে ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদনে বিএনপির ‘নোট অব ডিসেন্ট’ গুলো লিপিবদ্ধ না থাকায় এর সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অবাক হয়ে আমরা লক্ষ করলাম, কালকে যখন ঐকমত্য কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করলো সেখানে নোট অব ডিসেন্টগুলো নেই। পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে, ইগনোর করা হয়েছে। এটা তো ঐকমত্য হতে পারে না। তাহলে ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন? আমি বলব এই ঐকমত্য কমিশন জনগণের সঙ্গে একটা প্রতারণা করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও এটা প্রতারণা।’

বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিচার-সংস্কার-নির্বাচন, অন্তর্বর্তী আমলে বাংলাদেশ—প্রকাশনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

সরকারের কাছে দেওয়া ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদনের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল আমাদের সংস্কার কমিশন, ঐক্যমত কমিশন, তারা তাদের প্রতিবেদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে। প্রধান উপদেষ্টা সেখানে সই করেছেন, তিনি এটার চেয়ারম্যান। এখানে অবাক বিষয় আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি খুব পরিষ্কারভাবে, আমরা যেসব বিষয়ে একমত ছিলাম না, সেখানে আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিলাম।
সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল তাদের।
কিন্তু নোট অব ডিসেন্টগুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে, ইগনোর করা হয়েছে।

দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অবিলম্বে এই বিষয়গুলো যদি আপনারা সংশোধন না করেন, তাহলে এটা ঐক্যের বিপরীতে যাবে। এটি সংশোধনের প্রয়োজন আছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘একটি কথা খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, যেটা আমরা এর আগেও বলেছিলাম। আমরা মনে করি, সমস্ত সংকটগুলোর মূলে যে বিষয়টা আছে, সেটা হচ্ছে—একটা সত্যিকার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের যে পার্লামেন্ট তৈরি হবে, সেই পার্লামেন্টেই এই সমস্ত সমস্যাগুলো সংবিধানের মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হবে এবং সেভাবেই দেশ চলবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সেই কারণেই ৫ আগস্টের পরেই নির্বাচনের কথা বলেছিলাম।
তখন আমাদেরকে অনেকে বলেছিলেন, আমরা ক্ষমতা চাই, সেজন্য আমরা অতিদ্রুত নির্বাচন চাইছি। আজকে প্রমাণিত হচ্ছে যে, এই নির্বাচনটা যত দেরি হচ্ছে, ততই সেই শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে। যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল দেখতে চায়, এখানে একটা এনার্জি তৈরি করতে চায়, যাতে গণতন্ত্র সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত না হয় সেই ব্যবস্থাই তৈরি হচ্ছে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার করে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের পদ্ধতি যেভাবে পার্লামেন্টে আসবে, সেই পার্লামেন্টই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে। সুতরাং আজকে যদি এর থেকে কোনো ব্যর্থতা ঘটে, এর থেকে বাইরে যান, তার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই বহন করতে হবে এ কথাটা আমি খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জাতি হিসেবে ঠিক এক্সাক্টলি কোন জায়গায়, কিভাবে যেতে চাই সেটা আমরা সঠিকভাবে অনুভব করতে পারছি কিনা? এত বড় একটা আপনার অভ্যুত্থান, এত ত্যাগের বিনিময়ে, এত প্রাণের বিনিময়ে সেটাকে আমরা ঠিকভাবে আমাদের জাতির কল্যাণে কাজে লাগাতে পারছি কিনা, দুর্ভাগ্যবশত আমরা দেখছি, যতই দিন যাচ্ছে, ততই আমরা বেশি বিভক্ত হয়ে পড়ছি। বিভক্তের বিষয়টা কারা করছেন, কেন করছেন এটাও আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখবেন, আজকে প্রবলভাবে মিডিয়াতে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে, কতগুলো পক্ষ নিয়ে একেবারে নেমে যাওয়া হয় এবং প্রতিপক্ষকে একেবারে পুরোপুরি ঘায়েল করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। আমাদের ন্যূনতম বিষয়গুলোতে একমত হয়ে আমরা একটা রাস্তা ধরব, একটা ট্র্যাক ধরব। সেই জায়গায় এটাকে বিভক্ত করে ফেলা হচ্ছে। কারা করছেন, কেন করছেন এটা নিশ্চয়ই আপনারা উপলব্ধি করছেন এবং নিশ্চয়ই আপনারা সেভাবে চিন্তাও করছেন।’

বিএনপি সংস্কার চায়না- এ কথা মিথ্যা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির জন্ম সংস্কারের মধ্য দিয়েই। অথচ কনসাসলি একটা প্রচারণা চালানো হলো যে বিএনপি সংস্কারবিরোধী। এটা টোটালি ফলস, একটা মিথ্যা প্রপাগান্ডা। বিএনপি যে সংস্কারের মধ্য দিয়েই জন্ম নিয়েছে, সে কখনো সংস্কারবিরোধী হতে পারে না।’

সারাবাংলা/এফএন/এনজে
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর