ঢাকা: আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টিও যেন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ না পায়- সে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, সরকারের কাছেও তারা এ দাবি জানিয়েছে।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ভিপি নুর নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) মেরুদণ্ড শক্ত রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেইসঙ্গে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দিনই জুলাই সনদ ইস্যুতে গণভোট আয়োজনের পক্ষে মত দেন তিনি।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনীতিতে ‘বেশ উত্তাপ’ ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের বক্তব্য একেবারেই বিপরীতমুখী, এটা কথা আর বাকযুদ্ধ। প্রকৃত অর্থে সবাই জাতীয় নির্বাচনে ফোকাস দিচ্ছে।’
তিনি জানান, ঐকমত্য কমিশন থেকে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে সরকারের কাছে। সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে কী প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়ন করবে। সেক্ষেত্রে (গণভোট কবে) সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে ইসি। তাই এখনকার বাস্তবতায় দু’টি ভোট করার ওই বাস্তবতা নেই। সেজন্য জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোটের পক্ষে মত দেন নুর।
নির্বাচন বিলম্বিত হলে সংকটের কথা তুলে ধরে গণঅধিকার পরিষদ। দলের সভাপতি বলেন, ‘এখনই জুলাই সনদ নিয়ে যদি এই বিভক্তি-বিভাজন থাকে তাহলে কিন্তু ইলেকশনটা যথাসময় হবে না। নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে। আর নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, তাহলে দেশ একটা চরম বিপদের সম্মুখীন হবে, বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে।’
ভোটের এক মাস আগে নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হলে কমিশনকে সরকারপ্রধানের সঙ্গে আলাপ আলোচনার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া, জোটভুক্ত হলেও স্ব স্ব দলের প্রতীকে ভোট করার বিধানকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন নুর। কালোটাকা, পেশীশক্তি ও ভয়ভীতিমুক্ত নির্বাচন আয়োজন, ভোটেকেন্দ্র সিসিটিভ ব্যবহার, কেন্দ্রে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশের ব্যবস্থা রাখার দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
এক প্রশ্নের জবাবে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘এই মুহূর্তে উদীয়মান একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা সারা দেশে সংগঠন সম্প্রসারণে কাজ করছি। ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই, তাদের পরিচিত করা ও গণসংযোগ জোরদারের কাজ চলছে। আপাতত কারও সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আমরা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে আলোচনা চলছে।’
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব রয়েছে, জামায়াতের সঙ্গেও কথাবার্তা চলছে। আবার বিএনপি-জামায়াতের বাইরেও বিকল্প রাজনৈতিক জোট গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠক ও আলোচনা হয়েছে।’ কিন্তু এখন পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি বলে জানান তিনি।