ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি নারীর কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়াতে সারাদেশে শিশু পরিচর্যা বা ডে-কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ উদ্যোগের ঘোষণা দেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যার সুযোগ না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেন, অথবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ করে দেন, তখন বাংলাদেশ হারায় সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা এবং অগ্রগতি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির লক্ষ্য একটি আধুনিক, গণমুখী বাংলাদেশ গঠন—যেখানে কোনো নারীকে তার পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে বেছে নিতে হবে না।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, দেশে পুরুষদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার ৮০ শতাংশ হলেও নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ৪৩ শতাংশ। এই ব্যবধান দেশের অর্ধেক মেধা ও দক্ষতাকে পিছনে ফেলে রাখছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির পরিকল্পনায় যা রয়েছে:
- সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন।
- সরকারি অফিসগুলোতে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জাতীয় পরিকল্পনা।
- বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা।
- শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থায় রাখা নিয়োগকর্তাদের জন্য কর ছাড় ও সিএসআর ক্রেডিট প্রদান।
- কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া চালু করা।
তারেক রহমান বলেন, ‘এই উদ্যোগ নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে এবং দেশের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত অবদান রাখতে পারে। শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ। সড়ক যেমন বাজারকে সংযুক্ত করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সাফল্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে।’
তারেক রহমান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-এর গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘যেসব কারখানায় ডে-কেয়ার সুবিধা আছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি এবং অনুপস্থিতি কম। তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী মায়েদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।’
বিএনপির এই নীতি উদ্যোগের লক্ষ্য—২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা, যেখানে নারী-পুরুষ সমানভাবে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করবে।
শেষে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা এমন যেকোনো পশ্চাৎমুখী ধারণা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে। শিশু পরিচর্যা, সমান মজুরি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায়সংগত নয়; এটিই বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি।’
 
                                     
                         
                         
                        