ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে পুলিশের ব্যাপক অভিযানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১৩২। সংবাদমাধ্যম বিবিসির বরাতে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) শহরের আলেমাঁও ও পেনহা বস্তি এলাকায় পরিচালিত এই অভিযান রিওর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বলে জানা গেছে।
প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ৫৮ জন বলে জানানো হলেও বুধবার সকালে স্থানীয় জনরক্ষাকারী অফিস (পাবলিক ডিফেন্ডারস অফিস) নতুন হিসাবে ১৩২ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। ক্ষুব্ধ স্বজনেরা একে একে লাশগুলো এনে পেনহা এলাকার একটি চত্বরে সারিবদ্ধভাবে রেখে প্রতিবাদ জানান।
রিও রাজ্যের গভর্নর ক্লাউডিও কাস্ত্রো জানান, ফরেনসিক পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তবে তিনি স্বীকার করেন, সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুরো এলাকা যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র গ্যাং সদস্যদের বন্দুকযুদ্ধ চলতে থাকে। বাসে আগুন ধরিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে রাখে সশস্ত্র দলগুলো। এমনকি ড্রোন ব্যবহার করে পুলিশের ওপর বিস্ফোরকও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ করে নিরাপত্তা বাহিনী।
গভর্নর কাস্ত্রো অভিযুক্তদের অপরাধী বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘যেখানে অভিযান হয়েছে তা জঙ্গল, সেখানে সাধারণ কেউ থাকার কথা নয়। দুই মাস ধরে পরিকল্পিত এই অভিযানে রেড কমান্ড নামের শক্তিশালী মাদকচক্রের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অভিযানে চার পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।’
রিওর জননিরাপত্তা মন্ত্রী ভিক্টর সান্তোস বলেন, ‘এটি যুদ্ধ। বহু বছরের অবহেলা মাদক গ্যাংগুলোকে শক্তিশালী করেছে।’ অভিযানের এলাকায় প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার বাসিন্দা রয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রিও ডি জেনেইরোর বস্তি এলাকায় সক্রিয় শক্তিশালী মাদকচক্র ‘রেড কমান্ড’ হারানো এলাকা পুনর্দখল ও ড্রোনসহ আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। এতে এলাকাবাসী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা বেড়ে যায়। নির্বাচনের আগে শক্ত অবস্থান দেখানো এবং আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও গভর্নর বড়সড় অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। বহু বছরের অবহেলা ও দুর্বল প্রশাসনের কারণে গ্যাংগুলো স্থানীয় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে রাখায় সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ এ অভিযান শুরু হয়।