বাগেরহাট: জলবায়ু কর্মদিবস উপলক্ষ্যে শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় মোংলায় কানাইনগর পশুর নদীর পাড়ে আয়োজিত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসুচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, উপকূলীয় জীবন-জীবিকাসহ সুন্দরবন রক্ষায় জলবায়ু অর্থায়নের এখনই সময়। ধনী দেশগুলোকে ঋণ নয়, জলবায়ু ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। উদ্বাস্তু রোধ, খাদ্য, পানি ও জমি রক্ষায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানি পরিহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে জলবায়ু অর্থায়ন বরাদ্দ দিতে হবে । ন্যায্য সবুজ জ্বালানি রূপান্তর ঘটাতে হবে। জলবায়ু উষ্ণতা থেকে আমরা বাঁচতে চাই। লবণাক্ততা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে মানব স্বাস্থ্য, কৃষি এবং পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে।
জলবায়ুর পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে বলেও দাবি করেন বক্তারা।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে জলবায়ু ন্যায় বিচারের দাবিতে এ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রীয় নেতা মো. নূর আলম শেখ।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ হাওলাদার, জাহিদ হোসেন ব্যাপারি, ফারজানা বেগম, পরিবেশকর্মী হাছিব সরদার, মেহেদী হাসান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশযোদ্ধা মো. নূর আলম শেখ বলেন, সারাবিশ্বের সাধারন মানুষ ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, জলবায়ু বিপর্যয় এবং প্রকৃতির ধ্বংসের প্রভাব অনুভব করছে। নদী ভাঙ্গন এবং সিডর আইলার মতো ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবন উপকূলের মানুষ বিপর্যস্ত। নিরাপদ খাবার পানির সংকট ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। তাই জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে। জলবায়ু ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ হাওলাদার বলেন, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃক নদী দূষণের ফলে পশুর নদী মাছশুন্য হয়ে পড়েছে। লবণাক্ততা সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
নারীনেত্রী ফারজানা বেগম বলেন, লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারনে উপকূলের নারীরা জরায়ু ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত। জলবায়ু পরিবর্তন নারীর প্রজনন স্বাস্থ্যর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তরুণ পরিবেশযোদ্ধা মেহেদী হাসান বলেন, ‘জলবায়ু উষ্ণতা ও উদ্বাস্তু রোধে তথাকথিত উন্নত দেশগুলোকে আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তর ঘটাতর হবে।’
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-৩০ ঘিরে বিশ্বনেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত জেলে, বাওয়ালি, মৌয়ালি, নারী, ইয়ুথসহ সুন্দরবন উপকূলের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ পশুর নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের হাতে জলবায়ুকেন্দ্রীক দাবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন শোভা পায়।