সাতক্ষীরা: পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে আব্দুস সাত্তার গাজী (৫৫) নামে এক জেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। সুন্দরবনের কুকোমারি এলাকায় খালপাটা জাল বিছানোর সময় নদীর মধ্যেই তার মৃত্যু হয় বলে স্বজনদের বরাতে তথ্য নিশ্চিত করেছে বন বিভাগ। তিনি উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সিংহড়তলী গ্রামের মৃত বক্স গাজীর ছেলে।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার ফজলুল হক জানান, সাত্তার গাজী নিবন্ধিত বনজীবী। তিনি বৈধ পাস পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে জেলে নৌকা নিয়ে গিয়েছিল। এরমধ্যে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের অধীন গহীন জঙ্গলের তক্তাখালী খালের মধ্যে মাছ ধরার সময় বুকে ব্যাথা অনুভব করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় বলে তার স্বজনরা বন বিভাগ কে জানায়। চিকিৎসকের মতামত নিতে পারলে কী অসুস্থতা নিশ্চিত হওয়া যাবে। মৃত জেলের লাশ চুনকুড়ি ক্যাম্পের বনকর্মীদের সহযোগিতায় বনকর্মী, সিপিজি ও স্বজনরা বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। মঙ্গলবার তার জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক ভাবে দাফন করা হয়েছে।
মৃতের সহযোগী জেলে খানজাহান আলীর জানান, গত ১২ নভেম্বর তারা তিনজন কদমতলা স্টেশন থেকে পাশ নিয়ে সুন্দরবনে যায়। সোমবার দুপুরের দিকে কুকোমারী খালে জাল ফেলার সময় আকস্মিকভাবে বুকে ব্যাথা অনুভব করে আব্দুস সাত্তার। এসময় নিজেকে ধরতে বলে সে নৌকার মধ্যে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে গত ছয় মাসে সুন্দরবনে মাছ শিকারে যেয়ে তিন জেলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো বলে জানান তিনি।
আব্দুস সাত্তারের ছেলে রাহুল ও বাবুল জানান মাছ ধরতে যেয়ে সোমবার তার পিতার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। মৃতদেহ নিয়ে সহযোগীরা বাড়িতে ফিরে আসে। সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া শিকারে যাওয়া জেলেদের তাৎক্ষনিক চিকিৎসায় টহলফাঁড়িগুলোতে জরুরী কিছু ঔষধ রাখার দাবি জানান তারা।
গত ৬ মাসে সাতক্ষীরা রেঞ্জে মাছ ও কাঁকড়া শিকারে যেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মোট ৩ বনজীবীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে খলিলুর রহমান (৬০) ও মার্চ মাসে হরিপদ গাইনের মৃত্য হয় বনের মধ্যে।
কদমতলা স্টেশনর অফিসার সুলতান আহমেদ জানান, অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হলে কোন বনজীবীকে বনবিভাগের পক্ষ থেকে কোন আর্থিক সহায়তা দেয়ার সুযোগ থাকে না।