ঢাকা: জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হয়েছে। এ লড়াই থামবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত দুর্নীতি মাটিতে মিশে না যাবে। এখন দুর্নীতি আকাশচুম্বি। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিড়া-উপশিড়ায় সব জায়গায় দুর্নীতি। এই দুর্নীতির বিষবাষ্প বের করে আনতে হবে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে তার নিজ নির্বাচনি এলাকা ঢাকা-১৫ আসনের মিরপুরে এক প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সহযোগিতা করলেও পরে লুটতরাজের মাধ্যমে তার বিনিময় নিয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের ১৭ বছরে ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের ওপর আওয়ামী সরকারের দমন-পীড়ন দেখে সাধারণ মানুষ ঘরে বসে থাকতে পারেনি। রাস্তায় গুলিতে সন্তুষ্ট না হয়ে আকাশ থেকেও গুলি চালানো হয়েছে।’
গত দেড় বছরে জামায়াতের নেতাকর্মীরা কারেও ওপর ব্যক্তিগত কোনো প্রতিশোধ নেয়নি জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করলেও জামায়াত বিবেক দিয়ে দেশ রক্ষা করেছে। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই কেউ প্রতিশোধ নেয়নি। শেখ হাসিনার বিচার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রায়ের ফলে স্বজনহারা পরিবার কিছুটা স্বস্তি পাবে।’
তিনি বিচার বিভাগকে রায় কার্যকরের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ভবিষ্যতে সব পর্যায়ে ন্যায় বিচার কার্যকর করা হবে। কারও মুখ দেখে বিচার করা হবে না। আমি নিজে যদি কোনো অন্যায় করি আমারও বিচার হবে।’ নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশকে ভালোবাসলে আইনের হাতে নিজেদের সোপর্দ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পুনর্গঠন জামায়াতের প্রধান লক্ষ্য। নৈতিকতার ভিত্তিতে নতুন শিক্ষা কাঠামো গড়ে তোলা হবে, যাতে কোনো সন্তান বিপথে না যায়। পিছিয়ে পড়া মানুষদের এগিয়ে নেওয়াই তাদের কর্মসূচির মূল অংশ। শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের পাশাপাশি কেউ পাশ করার পর কাগজ নিয়ে যাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয় সে ব্যবস্থা করা হবে। পাস করার সাথে সাথে কর্মসংস্থান হবে।’
দেশকে দুর্নীতিমুক্ত না করা পর্যন্ত লড়াই চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব সম্পদশালীর সম্পদ নিরাপদ রাখার দায়িত্ব নেবে জামায়াত। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। এখন ফুটপাথের ব্যবসায়ীদেরও চাঁদা দিতে হয়। আমরা ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের সম্মানজনক স্থানে ব্যবসা করার ব্যবস্থা করব। কাউকে কোনো চাঁদা দিতে হবে না। আমরা তেলে মাথায় তেল দেব না। যার মাথায় তেল আছে তার তেল নিয়ে সে থাকবে।’
সভ্য দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখলেও কারও আধিপত্য মেনে নেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীন দেশ। একটা স্বাধীন দেশের পররাষ্ট্রনীতি যেরকম থাকার কথা আমরা সেরকম গড়ে তুলব।’ তিনি বলেন, ‘নারীরাই সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। তাদের সম্মান দেওয়া হবে।’