রংপুর: রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী এটিএম আজহারুল ইসলাম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জুলাই সনদভিত্তিক গণভোটের আয়োজনের জোরালো দাবি তুলেছেন। সরকারের সাম্প্রতিক ঘোষণায় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হলে গোলমাল সৃষ্টি হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল দুপুর পর্যন্ত বদরগঞ্জ পৌরশহরের সাহাপুর মাঠসহ একাধিকস্থানে জামায়াত উপজেলা শাখার আয়োজনে ছয় হাজারেরও বেশি মোটরসাইকেলের বিশাল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি জানান তিনি।
শোভাযাত্রাটি সাহাপুর মাঠ থেকে শুরু হয়ে শ্যামপুর, নাগেরহাট, পদাগঞ্জ, লোয়ানীপাড়া, ওসমানপুর, ট্যাক্সেরহাট, গোপীনাথপুরের বটেরহাট, লালদীঘি, ধোলাইঘাট, তারাগঞ্জ, একরচালি, শেখেরহাট হয়ে আবার সাহাপুর মাঠে শেষ হয়। এতে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর পর অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ গড়ে উঠেছে। জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা, তার সঙ্গে গণভোট গোলমাল তৈরি করলে সাধারণ মানুষ মেনে নেবে না। নির্বাচন কমিশন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাই গণভোট আগে হওয়া উচিত।’ জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারী দলগুলোর যৌথ অবস্থান অনুসরণ করে তিনি এই দাবি জানিয়েছেন, যা জামায়াতসহ আটটি দলের সামগ্রিক আন্দোলনের অংশ।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘বিনা দোষে ১৪ বছর জেলে কাটিয়েছি। এলাকার মানুষ আমার জন্য দোয়া করেছে, তাই তারা আমাকে ভোট দেবে। আমার বিজয় এমন হবে যে, প্রতিদ্বন্দ্বীরা ধারের কাছেও আসতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘প্রচারকার্যে সাড়ে তিন-চার মাস ধরে বদরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরছি। সবস্তরের মানুষের সমর্থন পাচ্ছি, বিশেষ করে নারী ও তরুণ প্রজন্মের। জুলাই বিপ্লবে তরুণরা সরকার হটিয়েছে, তাই তাদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। যুবক-বৃদ্ধ, মহিলা এবং অমুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। ভোটের পরিবেশ অনুকূল, এটি অব্যাহত থাকলে কোনো সমস্যা হবে না।’
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের প্রশ্নে তিনি জোর দেন, ‘প্রশাসনে এখনো পক্ষপাতদুষ্ট লোক আছে, যারা এক দলের পক্ষে কাজ করে। সরকারি কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা অব্যাহত না রাখলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব।’ নির্বাচিত হলে তার পরিকল্পনা ভোটাদের কাছে তুলে ধরে বলেন, ‘সর্বপ্রথম রাস্তাঘাট মেরামত করব, যেগুলো বৈষম্যের শিকার হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করব, সুষ্ঠু শিক্ষা পরিবেশ ফিরিয়ে আনব। কোনো বৈষম্য থাকবে না, সবাইকে সমান চোখে দেখা হবে।’
দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এমন দাবি করে বলেন, ‘জামায়াতের কেউ কখনো দুর্নীতিতে জড়ায়নি, ভবিষ্যতেও জড়াবে না। আমি দুর্নীতিমুক্ত থেকে কাজ করেছি, নির্বাচিত হলে সরকারি-বেসরকারি বরাদ্দ সঠিকভাবে বিতরণ করব। হারামের টাকা আমার পেটে ঢুকবে না।’