ঢাকা: বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি কাঙ্খিত মাত্রায় পৌঁছায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন বিষয়ক নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করলেও আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতি কাঙ্খিত মাত্রায় পৌঁছায়নি। তাই এ বিষয়ে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
সোমবার (০১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ‘ডিসিসিআই জার্নাল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক পলিসি’-এর দ্বিতীয় সংষ্করণ এবং ‘ট্যাক্স গাইড ২০২৫-২৬’-এর মোড়ক উন্মোচনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই)-এর চেয়ারম্যান ও ডিসিসিআই জার্নালের প্রধান সম্পাদক ড. জায়েদী সাত্তার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)’র সদস্য (কর ব্যবস্থাপনা ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ।
বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে ঢাকা চেম্বারের গবেষণা কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘রুল অব অরিজিন’ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যান্য বিষয়ের উপর সুনির্দিষ্ট গবেষণাপত্র ও প্রকাশনা প্রণয়নের মাধ্যমে ডিসিসিআই দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।
পিআরআই’র চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার বলেন, সম্প্রতি বেশকয়েকটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশে দারিদ্রতার হার বৃদ্ধির আংশকার বিষয়টি ওঠে এসেছে, যা বেশ উদ্বেগের বিষয়। সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো সম্ভব হলে দারিদ্রতা বৃদ্ধির আংশকা দূরীভূত হবে। তবে এক্ষেত্রে রফতানিমুখী শিল্পায়নের প্রতি বেশি মনোযোগী হওয়া এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের রফতানি আরো সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক বিদ্যমান নীতিমালার দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।
এনবিআর সদস্য জিএম আবুল কালাম কায়কোবাদ বলেন, ঢাকা চেম্বার কর্তৃক প্রকাশিত ট্যাক্স গাইডটি দেশের সকল স্তরের করদাতাদের অনলাইন কর প্রদান প্রক্রিয়াকে আরো সহজতর করবে।
তিনি বলেন, অনলাইন ভিত্তিক কর প্রদান ব্যবস্থা জনগনের মাঝে স্বস্তি আনায়নের পাশাপাশি হয়রানি দূর করবে, সেই সাথে দেশের সামগ্রিক রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। ইতোমধ্যে প্রায় ২০ লাখ করদাতা অনলাইন প্রক্রিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে করা প্রদান করেছে এবং ৫০ লাখ মানুষ চলতি বছরে এ ব্যবস্থায় কর প্রদান করবে বলে এনবিআর প্রত্যাশা করছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, গত চার দশক ধরে ঢাকা চেম্বার তার সদস্যদের আয়কর, ভ্যাট, কাস্টমস আইনের পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত করার জন্য ‘ডিসিসিআই ট্যাক্স গাইড’ প্রকাশ করে আসছে।
দেশের সার্বিক উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে জিডিপি-তে করের অবদান বাড়াতে করজাল সম্প্রসারণ, রাজস্ব প্রদানের প্রক্রিয়ার পুরোপুরি অটোমেশন নিশ্চিতকরণ এবং সংশ্লিষ্ট নীতিমালার সহজীকরণ ও সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, দেশের বেসরকারি খাত ও অর্থনীতির সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তথ্য নির্ভর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি খাতভিত্তিক সুপারিশমালা প্রণয়নে ডিসিসিআই প্রতিনিয়ত কাজ করে আসছে, এ ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত ‘ডিসিসিআই জার্নাল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক পলিসি’-এর দ্বিতীয় সংষ্করণে সামষ্টিক অর্থনীতি, দক্ষতা উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, এলডিসি উত্তরণ, আমদানি-রফতানি ব্যবস্থাপনাসহ রাজস্ব ও মুদ্রানীতি প্রভৃতি বিষয় এ গবেষণাপত্রে স্থান পেয়েছে, যা সরকার ও বেসরকারি খাতে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে সহায়ক হবে।