ঢাকা: ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন ব্যাংকটির সকল এজেন্ট উদ্যোক্তারা। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
বুধবার (০৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সকল এজেন্ট উদ্যোক্তা : অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি’ শীর্ষক ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকটির এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় সারাদেশে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলে এজেন্ট মালিকরা জানান, ২০১৬ সাল থেকে অগ্রণী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু চলতি বছরের গত ২০ জুন কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এভাবে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ৫৬৭টি এজেন্ট আউটলেট এবং প্রায় ৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এ সেবায় কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ আজ ঝুঁকির মুখে পড়েছে- এমন দাবি করে তারা বলেন, অন্যদিকে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১০ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক ও ৫ লাখ অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহারকারী। বিশেষ করে ভাতাভোগী, কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসী এবং রেমিট্যান্স গ্রহণকারীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক মো. আবু সাইদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনিরুল ইসলাম, আশেকে রাসুল, প্রকৌশলী মেজবাহ, সাহিদা আক্তার, নাসরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আবু সাইদ বলেন, প্রতিটি আউটলেট চালাতে মাসে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা খরচ হয়। সেবা বন্ধ থাকায় এখন এই ব্যয় আমাদের ব্যক্তিগত অর্থ থেকে বহন করতে হচ্ছে। আমরা উদ্যোক্তারা নিঃস্ব হয়ে পথের ভিখারি হয়ে যাচ্ছি। এমতাবস্থায় দীর্ঘদিনের বকেয়া বিল পরিশোধ এবং সার্ভার চালুর দাবিতে গত ২৪ নভেম্বর থেকে টানা দশ দিন ধরে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে আমরণ অবস্থান করছেন এজেন্ট মালিকরা। এটি তাদের পঞ্চম দফা আন্দোলন।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের এমডি বা চেয়ারম্যান কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে ‘এজেন্ট উদ্যোক্তারা গেটে মারা গেলেও সমাধান নেই’- এমন কথা শুনিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও জিএম সফটওয়্যার আপগ্রেড করে নতুনভাবে চুক্তি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তারা সেই প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করছেন। ক্ষমতাবান কিছু কর্মকর্তা ব্যক্তিগত স্বার্থে সফল একটি সেবা নেটওয়ার্ক ধ্বংস করছেন।
সংগঠনের নেতারা বলেন, সারাদেশের নারী ও তরুণ গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আমাদের উদ্যোগ, বিনিয়োগ ও স্বপ্ন আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই অসাধু চক্রের দ্রুত বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে- অনতিবিলম্বে সব বকেয়া পরিশোধ ও ক্ষতিপূরণ দিয়ে এজেন্ট সেবা চালু এবং হাইকোর্টের আদেশ দ্রুত বাস্তবায়ন এবং আপিল বিভাগে দায়ের করা আপত্তি প্রত্যাহার করা;
নারী ও তরুণ উদ্যোক্তাদের দুর্দশার জন্য দায়ী চেয়ারম্যানের পদত্যাগ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা; এবং
চলমান আরবিট্রেশন মামলা বারবার পেছানো বন্ধ করে দ্রুত নিষ্পত্তি করা।