Thursday 04 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুনামগঞ্জে ঠান্ডার তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে শীতের কাপড়ের দাম

আল হাবিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০১ | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:২১

ফুটপাতের বাজারে জমে উঠেছে শীতের কাপড়ের বেচাকেনা। ছবি: সারাবাংলা

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জে শীতের তীব্রতা দিনদিন বেড়েই চলেছে। একই সঙ্গে গরম কাপড়ের দামও বেড়েছে, যা ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জ্যাকেট, সোয়েটার, ট্রাউজার এবং কম্বলসহ বিভিন্ন পুরাতন শীতবস্ত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার তাদের বেশি দামে শীতবস্ত্র কিনতে হচ্ছে এজন্য ক্রেতাদের কাছ থেকে দামও বেশি নিতে হচ্ছে। জ্যাকেট, সোয়েটার, কম্বলসহ অন্যান্য গরম কাপড়ের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে শীত যত বাড়ছে ফুটপাতে গরম কাপড়ের বিক্রিও বেড়েছে, কিন্তু দাম বেশি থাকার কারণে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং শনিবার এই তিনদিন সকাল এবং সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার, থানা রোড, কোর্ট পয়েন্ট, ষোলঘর, ওয়েজখালী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতে কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। বিশেষ করে পুরাতন কাপড়ের দিকে ঝুঁকছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষজন ফুটপাত থেকে বেঁছে নিচ্ছেন তাদের শীতের কাপড়। ছবি: সারাবাংলা

শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়সিদ্দি গ্রামের ফাহিম এবং তার ছোট ভাই ইমনকে নিয়ে শহরে দীর্ঘদিন ধরে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করছেন। শীতকালে ছোট বাচ্চাদের সোয়েটার এবং প্যান্ট বিক্রি করেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চার বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। শীতে বাচ্চাদের জন্য গেঞ্জি এবং প্যান্ট বিক্রি করছি। আমরা ন্যায্য মূল্যে এসব কাপড় বিক্রি করে থাকি। ‘প্রতি পিস ৪০ টাকা একদাম’ তালিকা টাঙ্গিয়ে রাখি। ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো পোষাক কিনে নিচ্ছেন।

কোর্ট পয়েন্টে দীর্ঘদিন ধরে পুরাতন কাপড় বিক্রি করেন নুর হোসেন। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এই বছর কাপড়ের দাম বেশি। গত বছর যেখানে ১২০টি কাপড় (বিভিন্ন প্রকারের শীতবস্ত্র প্রতি বান্ডিলে ১২০টি) কিনতে হয়েছে ১৮ হাজার টাকায়, সেখানে এবার কিনতে হচ্ছে ২৮ হাজার টাকায়। অর্থাৎ প্রতিটি কাপড়ের বান্ডিলের দাম ১০ হাজার বেড়েছে। আমরা ক্রেতাদের কাছ থেকে কম লাভ করছি।

দিরাই উপজেলার শ্যামারচর থেকে লালপুর গ্রামের আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন রাবেয়া বেগম। বাড়িতে ফেরার পথে শহরে শীতবস্ত্র কিনতে এসেছেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য তিনটি ট্রাউজার এবং তিনটি সোয়েটার ২৪০ টাকায় কিনেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। ফেরার পথে আমার নাতি-নাতনিদের জন্য শীতের পোশাক কিনেছি। দামটা বেশি হলেও নতুন কাপড়ের তুলনায় অনেক কম আছে। পরিবারের লোকজন বেশি। আমরা গরীব মানুষ, এজন্য পুরাতন কাপড় কিনেছি।

ছবি: সারাবাংলা

রিকশাচালক শহিদ মিয়া কোর্ট পয়েন্টের একটি ফুটপাতের দোকান থেকে জ্যাকেট কিনেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনশ টাকা দিয়ে জ্যাকেটটি কিনেছি। দোকানদার পাঁচশ টাকা চেয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় দরকষাকষি করে এই দামে কিনতে হয়েছে। দাম বেশি হলেও শীতের পোশাক কিনতাম হবে। আমরা দিনে আনি দিনে খাই অবস্থা। শীতে রিকশা চালানো কষ্ট, এজন্য জ্যাকেটটি কিনতে হয়েছে।

বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটপাতে অনেক ব্যবসায়ীকে একদামের তালিকা টাঙ্গিয়ে রেখে গেঞ্জি, প্যান্টসহ শীতবস্ত্র বিক্রি করতে দেখা গেছে। একদামে বিক্রির কারণে ক্রেতাদের ভিড়ও বেশি। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন গেঞ্জি, প্যান্ট, সোয়েটারসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্র।

এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘শীতবস্ত্র বেশি দামে বিক্রি করার বিষয়টি মনিটরিং করে দেখব।’

সারাবাংলা/এনজে
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর