ঢাকা: বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে নাম আসায় বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমকে পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সামাদ, অ্যাডভোকেট শাহিন হোসেন ও অ্যাডভোকেট মো. আতিকুর রহমান যৌথভাবে এ নোটিশ পাঠান। প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জন প্রশাসন সচিব এবং আইন সচিবকে নোটিশের প্রাপক করা হয়েছে।
জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পাশাপাশি বিশেষ শাখায় (এসবি) দায়িত্ব পালনকালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন বাহারুল আলম। বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেও তিনি সক্রিয় ছিলেন বলে প্রতিবেদনে অভিযোগ আনা হয়। সংবেদনশীল এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই আইজিপির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশাসনে আলোচনার ঝড় বইছে।
২০০৯ সালের ২৫–২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা এবং আরও ১৭ জনসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় করা হত্যা ও বিস্ফোরণ আইনের মামলায় আদালত ১৩৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। আরও ২২৮ জন বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত হন। তদন্ত ও বিচার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ ও নানা প্রশ্ন ছিল।
দীর্ঘ দেড় দশক পর, গত জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর ২৪ ডিসেম্বর সাত সদস্যের জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠন করে সরকার। কমিশন ৩০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিবেদনের ১৪৬ নম্বর পয়েন্টে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়—তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ, তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার নাইম আহমেদ, তৎকালীন অতিরিক্ত আইজিপি (এসবি প্রধান) বাহারুল আলম, পলাতক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল কাহার আকন্দসহ তার তদন্ত দল।