Thursday 04 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেরোবি ছাত্রদল কমিটিতে ২০ লাখ টাকার ‘পদবাণিজ্যের’ অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১২ | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:২৫

পদবঞ্চিত সভাপতি প্রার্থী ইমরান হোসেন।

রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ের অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত সভাপতি প্রার্থী ইমরান হোসেন। তার দাবি, কেন্দ্রীয় নেতারা তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে আরও ১০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। না দেওয়ায় তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ তুলে ধরেন।

এ সময় তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এম এম মুসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদনান, তাইজুল এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির হোসেনকে সরাসরি দায়ী করেন। এই অভিযোগ বেরোবি ক্যাম্পাসে নতুন করে ঝড় তুলেছে, যখন গতকালই প্রতিষ্ঠাতা নেতা মুরসালিন মুন্নাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্র।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে ইমরান হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতারা আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেছেন। এম এম মুসা আমাকে বলেছিলেন, ১০ লাখ টাকা দিলেই সভাপতি হয়ে যাবে। আমি জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতি করি, টাকা দিয়ে পদ কিনি না। কিন্তু তারা বলেছিলেন, সভাপতি হলে নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারের সুবিধা পাব। এমনকি বর্তমান (সদ্য বিদায়ী কমিটি) আহ্বায়কের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন, লন্ড্রির দোকান থেকে টেন্ডার সব পাবে। উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগও করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েছিলেন।’

তিনি আরও দাবি করেন, থাকা-খাওয়ার খরচের নামে দুই ধাপে ২ লাখ টাকা দিয়েছিলেন কোচিং-প্রাইভেটের উপার্জিত টাকা থেকে। কিন্তু সন্তুষ্ট না হয়ে তারা জামায়াতপন্থী ও আওয়ামীপন্থী প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ২০ লাখ টাকার বেশি লেনদেনের মাধ্যমে পছন্দের লোককে কমিটিতে বসিয়েছেন।

ইমরান আরও বলেন, ‘এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় মুরসালিন মুন্নাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মুন্না ছাত্রদলের জন্য কাজ করতে গিয়ে ছাত্রত্ব হারিয়েছিলেন, দশ বছর পর ফিরে পেয়েছেন। অথচ যারা তার ছাত্রত্ব আটকে রেখেছিল, সেই বিতর্কিত লোকদেরই কমিটিতে পুরস্কৃত করা হয়েছে।’

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ছাত্রদল মুন্নাকে বহিষ্কার করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। মুন্না পাল্টা স্ট্যাটাসে কেন্দ্রকেই ‘বহিষ্কার’ করেন। ফেসবুকে তার সমর্থকরা বলছেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে মারধর খেয়েও লড়াই করা নেতাকে এখন নিজের দলই বহিষ্কার করল—এটা দুঃখজনক।’

অভিযোগের জবাবে এম এম মুসা বলেন, ‘কমিটিতে চলমান ছাত্রদেরই রাখা হয়েছে। ২০ লাখ তো দূর, ২০ টাকার লেনদেনেরও প্রমাণ দিতে পারলে খতিয়ে দেখুন। পদ না পাওয়ার ক্ষোভে ভিত্তিহীন অভিযোগ।’

এই অভিযোগ বেরোবি ছাত্রদলে গভীর বিভাজন সৃষ্টি করেছে। গত ২৭ নভেম্বর কমিটি ঘোষণার পর থেকেই মুরসালিন মুন্না এটাকে ‘ছাত্রলীগের লোক দিয়ে গঠিত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে দলীয় কমিটি গঠনই অন্যায়, তার ওপর টাকার লেনদেন—এটা অসহ্য।’

ছাত্রদলের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। বেরোবিতে ২০২১ সালের কমিটিতেও শিবিরকর্মী অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছিল।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর