চাঁপাইনবাবগঞ্জ: সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন শাহজাহানপুর, আলাতুলী ও চরবাগডাঙ্গা। এই ইউনিয়নগুলোতে কয়েক হাজার মানুষের বাস। দীর্ঘদিন ধরে একটি সেতুর অভাবে জেলা সদরের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই এলাকার মানুষ। স্কুল-কলেজ-বাজার সবকিছুর জন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। হাসপাতালে অসুস্থ রোগী নিতেও পাড়ি দিতে হচ্ছে লম্বা পথ। ব্যবসায়ীদের সদর থেকে মালপত্র আনা নেওয়াতে অসুবিধা হচ্ছে। এতে করে যাতায়াতে সময় যেমন বেশি লাগছে তেমন খরচও বাড়ছে।
নরেন্দ্রপুর কাচরার খালের উপর নির্মাণাধীন ৬০ মিটার সেতুর কাজ এক বছর ধরে পুরোপুরি বন্ধ। ২০২৩ সালে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৬ কোটি ৯০ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন সেতুটির কাজ ২০২৫ সালেশেষ হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তীতে সময় বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। মূল অবকাঠামো নির্মিত হলেও সেতুতে ওঠা নামা করার সংযোগ সড়কের অভাবে প্রায় এক বছর ধরে সেতুটি অচল অবস্থায় পড়ে আছে। মাত্র ৩০০ মিটার লম্বা সংযোগ সড়কটি এখনো তৈরি না হওয়ায় প্রতিদিন অতিরিক্ত ১০ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। সেতুর নিচে একটি বালি দিয়ে তৈরি পায়ে চলা পথ আছে। বাসিন্দারা দ্রুত যাতায়াতের জন্য সেই পথ ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে।
স্থানীয় আবুল কালাম অভিযোগ করেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই সেতুর নিচের রাস্তা দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ চরমে ওঠে। বারবার বললেও কেউ ব্যবস্থা নেয় না।’
আব্দুল মান্নান নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এক বছর ধরে সেতু দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু মানুষের কোনো কাজে লাগছে না। স্কুলে যাওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালে রোগী নেওয়াও এখন দূর ভ্রমণ।’
ঠিকাদার মো. সেলিম দাবি করেন,‘জমি অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ায় স্থানীয়দের বাধার মুখে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। সমস্যা সমাধান হলেই কাজ শুরু করা হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু জটিলতার কারণে কাজ বন্ধ আছে। শিগগিরই কাজে ফেরার চেষ্টা চলছে।’
এদিকে, দীর্ঘসূত্রতা আর অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ মানুষ আশা হারিয়ে ফেলছেন। তারা দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে সেতুটি চালু করার দাবি জানান।