ঢাকা: দিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক একটা বিষয় নিয়ে পড়ে থাকবে না- বলে মন্তব্য করেছেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমন একটা ক্যানভাস তৈরির চেষ্টা করছে, যেখানে দুই দেশেরই একটা ভবিষ্যৎ আছে।
বুধবার (০৩ ডিসেম্বর) কলকাতায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাই কমিশনার এসব মন্তব্য করেন বলে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র খবরে বলা হয়েছে। ভারতের ‘মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ (এমসিসিআই) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তা আসার দুদিন পর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে হাই কমিশনার এ বার্তা দেন।
হাই কমিশনারের এমন বক্তব্যকে দুই দেশের সম্পর্কের দূরত্ব কমে আসার ইঙ্গিত হিসেবে তুলে ধরেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রায় ৮ মাস আগে হাই কমিশনার হয়ে নয়াদিল্লিতে যাওয়া রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, নতুন একটা ক্যানভাসের কথা বলাটা যত সহজ, করাটা তত সহজ নয়। তবে অসম্ভবও নয়। “দুই দেশের আলোচনার টেবিলে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি স্পর্শকাতর অনেক বিষয় রয়েছে। কিন্তু এটাই সম্পর্কের স্বাভাবিকতা। আমরা যদি ক্যানভাসের একটা অংশ নিয়ে পড়ে থাকি, তাহলে সেটা ন্যায্য হবে না।”
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে ‘অর্গানিক’ মন্তব্য করে হামিদুল্লাহ বলেন, দুই দেশই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং পর্যটনের মতো খাত বিবেচনায় নিলে দ্বিপক্ষীয় ‘অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা’ এখন আড়াই হাজার কোটি ডলারের বেশি। “বাংলাদেশের আমদানির হিসাব এবং বন্দরসহ আনুষঙ্গিক যেসব সক্ষমতা তৈরি হয়েছে, সেদিকে তাকালেও তা বোঝা যায়।”
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআই’র গত আগস্টের প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে হাই কমিশনার বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য ১২ শতাংশ বেড়েছে। “ভারতীয়দের বাংলাদেশে যাতায়াত আমরা সীমিত করিনি। দুই দেশের সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে মানুষের বন্ধনের উপর দাঁড়িয়ে আছে। আমার কাছে এটাকে পারষ্পরিক নির্ভরতা মনে হয়।”
হামিদুল্লাহ বলেন, আগামী বছর নয়াদিল্লিতে একটি বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের শিকড়ের টানে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সুবিধা দেওয়ার কথাও বলেন।
সাংস্কৃতিক কূটনীতি, পর্যটন সুবিধা এবং গভীর অর্থনৈতিক একীভূতকরণের প্রতি ঢাকার ক্রমবর্ধমান ঝোঁক রয়েছে বলে মন্তব্য করেন হাই কমিশনার।
তিনি বলেন, “দুই দেশের সম্পর্ক যখন একটা ‘সংবেদনশীল’ অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন সম্পৃক্ততার পরিধি আরও বাড়ানোর বিষয়ে ঢাকার ইচ্ছা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।”