দক্ষিণ লেবাননে ফের বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, তারা ইরান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগার লক্ষ্য করে হামলা করেছে। এর মাত্র একদিন আগেই লেবানন এবং ইসরায়েলের অসামরিক প্রতিনিধিরা কয়েক দশকের মধ্যে তাদের প্রথম সরাসরি আলোচনা করেন। যদিও ২০২৪ সালের নভেম্বরে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল, যা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা শত্রুতার অবসান ঘটানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল। তবে ইসরায়েল লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি কৌশলগত এলাকায় সেনা মোতায়েন রেখেছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলি বিমান হামলা বেড়ে যাওয়ায় লেবাননে যে উত্তেজনা ছিল, পোপ লিও চতুর্দশের রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সফরের কারণে তাতে সাময়িক বিরতি আসে। পোপ তার সফরের সময় শত্রুতা বন্ধের আহ্বান জানান।
তবে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা দক্ষিণ লেবাননের মাহরুনা এবং জবাতে ভবনগুলোতে হামলার সতর্কবার্তা দেওয়ার পর, ‘দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো শুরু করেছে।’ এরপর ইসরায়েল আরও দক্ষিণে মাজাদাল এবং বারাসিতে হিজবুল্লাহর ‘সামরিক অবকাঠামো’তে হামলা চালানোর সতর্কতা জারি করে।
লেবাননের সরকারি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানায়, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান মাহরুনা শহরে হামলা চালিয়েছে এবং অন্যান্য হামলা জবা, মাজাদাল ও বারাসিতের ভবনগুলোকে লক্ষ্য করে করা হয়।
এএফপি’র একজন ফটোগ্রাফার জবা শহরে হামলার স্থান থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখেন।
স্থানীয় কর্মকর্তা ইয়াসির মাদি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ বেসামরিক এলাকা। আমরা মাঝে মাঝে ইসরায়েলি হুমকিতে অভ্যস্ত। ক্ষয়ক্ষতির কথা বলতে গেলে, ৩০০ মিটারের মধ্যে এমন কোনো জানালা নেই যা ভাঙেনি। সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।‘
এদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা বেসামরিক জনগণের হৃদয়ে অবস্থিত ‘হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগারে’ আঘাত করেছে এবং দাবি করে এটি হিজবুল্লাহর ‘লেবাননের বেসামরিক নাগরিকদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার’ করার আরও একটি উদাহরণ। লেবাননের সরকার হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু গোষ্ঠীটি এই ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছে।
বুধবার ইসরায়েল ও লেবাননের অসামরিক প্রতিনিধিরা ইসরায়েলের সীমান্তের কাছে লেবাননের নাকুরার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতরে যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার তত্ত্বাবধানে অপ্রত্যাশিত আলোচনা করেন। এই পর্যবেক্ষণ কমিটির প্রতিনিধিরা—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, লেবানন, ইসরায়েল এবং জাতিসংঘ বাহিনী—নাকুরায় নিয়মিত মিলিত হন। বৃহস্পতিবার লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন ঘোষণা করেন যে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনার আরেকটি দফা ১৯ ডিসেম্বর শুরু হবে।
তথ্যমন্ত্রী পল মোরকোস প্রেসিডেন্ট আউনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘প্রাথমিক আলোচনা ইতিবাচক ছিল এবং তিনি যুদ্ধ নয়, আলোচনার ভাষা প্রাধান্য পাওয়া জরুরি’ বলে জোর দেন।’