Saturday 06 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পদবাণিজ্যের অভিযোগ ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ দাবি বেরোবি ছাত্রদলের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:০৫ | আপডেট: ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১৩

বেরোবি ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে লাখ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে পদবাণিজ্যের অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও পদবঞ্চিতের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে নতুন কমিটি।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ মুসা (এম এম মুসা) সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকে ‘চরম অসত্য’ আখ্যা দিয়ে নতুন কমিটির সভাপতি মো. ইয়ামিন বলেন, ‘পদ না পাওয়ার ক্ষোভে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। আমরা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি-এক টাকা লেনদেনেরও প্রমাণ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক মো. জহির রায়হান, সহ-সভাপতি মো. তুহিন রানা, মো. মাইদুল ইসলাম বাপ্পি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রিফাত হোসেন রাফি এবং অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ‘নতুন কমিটি তৃণমূলের সুপারিশে গঠিত হয়েছে। কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি। পদবঞ্চিতরা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, যা আমরা প্রতিহত করব।’

এই সংবাদ সম্মেলন পদবঞ্চিত প্রার্থী ইমরান হোসেনের অভিযোগের প্রত্যুত্তর হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইমরান গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে আরও ১০ লাখ চেয়েছিলেন এবং না দেওয়ায় তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি মোল্লা মোহাম্মদ মুসা, আদনান, তাইজুল ও নাসির হোসেনকে সরাসরি দায়ী করেন।

তবে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ মুসা সেদিনই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, ‘২০ লাখ তো দূরের কথা, ২০ টাকারও লেনদেন হয়নি। এটা পুরোপুরি মিথ্যা। কমিটিতে চলমান ছাত্রদেরই রাখা হয়েছে। পদ না পাওয়ার ক্ষোভে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রমাণ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদলের রাজনীতি আদর্শের, সুবিধার নয়। যারা ত্যাগী, তাদের স্থান দেওয়া হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে গত বুধবারে প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক মুরসালিন মুন্নার বহিষ্কার নিয়ে প্রশ্ন উঠলে কমিটি বলে, ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে বহিষ্কার করা হয়েছে। এটা প্রতিহিংসা নয়, সংগঠন রক্ষার পদক্ষেপ।’ মুন্না সেদিন পালটা স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করেই ‘বহিষ্কার’ করেন এবং তার সমর্থকরা বলছেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে মারধর খেয়েও লড়াই করা নেতাকে নিজের দল বহিষ্কার করল-দুঃখজনক।’

এই পালটাপালটি অভিযোগ বেরোবি ক্যাম্পাসে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। শিক্ষার্থী ইমন আকন্দ বলেন, ‘ছাত্রদলের রাজনীতি এখন টাকা ও প্রতিহিংসায় ভরা। ছাত্রসংসদ নির্বাচনের আগে এমন বিভাজন ক্যাম্পাসকে অস্থির করে তুলছে।’

অর্থনীতি বিভাগের মেহেদী হাসান বলেন, ‘পদবাণিজ্যের অভিযোগ সত্য হলে তদন্ত হওয়া দরকার। ছাত্রদলের ভেতরের লড়াই আমাদের নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে।’

গত ২১ নভেম্বর বেরোবি কমিটি ঘোষণার পর থেকে পদবঞ্চিতদের অভিযোগ অব্যাহত। ২০২১ সালের কমিটিতেও শিবিরকর্মী অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছিল।

ক্যাম্পাসে এখন প্রশ্ন ছাত্রদলের রাজনীতি কি আদর্শে ফিরবে, নাকি পদবাণিজ্যে ধ্বংস হবে? আর নতুন কমিটি বলছে, ‘আমরা প্রমাণ দিয়ে জবাব দেব।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর