ঢাকা: দুই কার্যদিবস সূচকের ঊর্ধ্বগতির পর ফের দরপতনের ধারায় দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে পতন হয়েছে মূল্যসূচকের। তবে লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) চতুর্থ কার্যদিবসে এসব তথ্য জানা যায়।
ডিএসইতে দরপতন হলেও অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবস পুঁজিবাজারে দরপতন হয়। এরপর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও পুঁজিবাজারে দরপতন হয়। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় কার্যদিবসে এসে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। এতে পুঁজিবাজারে ফের ঊর্ধ্বমুখিতার স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তব হয়নি। বরং পুঁজিবাজারে ফের দরপতন হয়েছে।
মূলত লেনদেনের শেষ দেড় ঘণ্টায় এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে বেড়েছে ১১৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। এর বিপরীতে দাম কমেছে ২২৭টির। এ ছাড়া ৫৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬২টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২৩টির দাম কমেছে এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৫৯টির দাম কমেছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩৯টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৫টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১০টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এ ছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে নেমে গেছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৩৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৫৮ কোটি ৩ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৭৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ১১ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হলো।
অন্য পুঁজিবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা।