ঢাকা: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেছেন, সে আমার সন্তান সমতূল্য। হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়ে আমি মানসিকভাবে আহত হয়েছি। এ আঘাত গণতন্ত্রের ওপর আঘাত। যারা এই আঘাত করেছে তাদের কালো হাত ভেঙে দিতে হবে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, শুক্রবার দুপুর ২টায় হাদি গুলিবিদ্ধ হলেন; তার আধা ঘণ্টা পরই একটি দল উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া শুরু করে। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পেলাম সবই পরিকল্পিত। আমি ঢাকার ছেলে। দীর্ঘ ৫০ বছর ঢাকায় রাজনীতি করি। আমি শান্ত ছিলাম। আমার নির্দেশনা পেলে তোমাদের তুলোধুনো করতো। হাসপাতালে যারা এগুলো করেছে তারা হাদির সমর্থক নয়, তারা অন্য একটি দলের। আমরা শান্ত না থাকলে হাদির চিকিৎসা ব্যাহত হতো। তারা চেয়েছিল হাদির চিকিৎসা যেন ব্যাহত হয় এবং মারা সে যাক।
তিনি বলেন, একটি দলের ষড়যন্ত্র আমরা ৪৭, ৭১, ৮৬, ৯০, ৯১সহ অনেক দেখেছি। এদের মূল শক্তিই ষড়যন্ত্র। এরা স্থির রাষ্ট্র সহ্য করতে পারে না। তাই রাষ্ট্রকে সবসময়ই অস্থিতিশীল রাখতে চায়।
তিনি বলেন, একজন মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে— সে যেই হোক, আমি তার মৃত্যু কামনা করি না। কিন্তু হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এক থেকে দেড় শ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মব তৈরির উসকানি দিয়েছে। তারা সবাই একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত।
তিনি আরও বলেন, আমি ১৯৭৭ সাল থেকে নির্বাচন করছি। কখনও কারও সঙ্গে মারামারি করিনি। নির্বাচনেও আমরা কোলাকুলি করেছি, একসঙ্গে খেয়েছি। কিন্তু মারামারি আর সহিংসতা করে একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক দল। আর নির্বাচনসহ রাষ্ট্রকে অস্থির করে সেই বিতর্কিত রাজনৈতিক দল। আমরা চাই হাদির ওপর হামলাকারী গ্রেফতার হোক এবং বিশেষ দলের মুখোশ উম্মেচিত হোক।
তিনি বলেন, হাদি আমার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, প্রতিযোগী। সে রাজপথের সাহসী সৈনিক। তাকে আমি নির্বাচনি মাঠে আবারও সক্রিয় পাব সেই প্রত্যাশা করি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজিত এ সমাবেশে সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরও বক্তব্য দেন যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, শেখ রবিউল আলম, হাবিবুর রশিদ হাবিব, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল কবির পল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর ফকিরাপুল মোড় ঘুরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।