ঢাকা: ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলের গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় গ্রেফতার ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা যায়।
জেআইসি সেলে গুম–নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রসিকিউশনের আনা পাঁচটি অভিযোগের বিষয়ে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেবেন ট্রাইব্যুনাল–১। গত ৯ ডিসেম্বর এদিন ধার্য করা হয়।
এ মামলায় গ্রেফতার তিন সেনা কর্মকর্তা হলেন— ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
এ ছাড়া র্যাবের টিএফআই সেলে গুম–নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আজ শুনানি করবেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
এর আগে, গত ৩ ডিসেম্বর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ বিষয়ে শুনানি করেন। তিনি গুমের ভয়াবহতা তুলে ধরে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আবেদন জানান।
এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে সাব–জেলে থাকা ১০ সেনা কর্মকর্তাকেও আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন— র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
অন্যদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জন হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় বিজিবির কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আজ শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। গত ৬ ডিসেম্বর চিফ প্রসিকিউটর ফরমাল চার্জের ওপর শুনানি শেষ করেন। আজ এ বিষয়ে আসামিপক্ষ ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা শুনানি করবেন। রেদোয়ানুল ইসলাম ছাড়া অপর আসামি হলেন বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম।
এদিকে সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা উপলক্ষে বরাবরের মতোই হাইকোর্টের মূল ফটকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের দুই পাশে বিজিবি, র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। পাশাপাশি এপিবিএন সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও তৎপর দেখা গেছে।