ঢাকা: ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের বক্তব্যের সমালোচনা করে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে জুলাইয়ের অন্যতম বীর ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করার ঘটনায় আমরা শঙ্কিত। যাদের মনে সামান্য মানবিক মূল্যবোধ আছে তারা সকলেই এই ঘটনায় ব্যথিত। অথচ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জাতিকে ব্যথিত করেছেন। সিইসিকে জাতির সামনে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নয়তো জাতি পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
কোনো বিভক্তি নয়, ঐক্যের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, আমাদের বন্ধুপ্রতিম সংগঠন বলেছে, তারা নির্বাচিত হলে সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবে, তবে কোনো কোনো দলকে নেবে না। কিন্তু আমরা তাদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছি- আমরা নির্বাচিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপনাদেরকে সহ সকল ফ্যাসিবাদ বিরোধী দলকে নিয়ে সরকার গঠন করবে। তবে এক্ষেত্রে জাতির সামনে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, ‘সরকারে গিয়ে কেউ দুর্নীতি করবে না, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করবে।’
তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশ বিশ্বের সভ্য জাতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার বাংলাদেশ হবে। এই বাংলাদেশ হবে মা-বোনদের ইজ্জত রক্ষার বাংলাদেশ। আর কোনো মা-বোনের কান্নার আওয়াজ শুনতে চাই না। আমরা কারো কাছে হাত পেতে জীবন চালাব না।
তিনি বলেন, আমরা এটাও চাই না আমাদের জাতির ওপর কেউ বাহির থেকে এসে দাদাগিরি করুক। আমরা চাই সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আমাদের দেশ আমরা গড়ব। আমরা চাই বিভক্তি নয় ঐক্যের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক। জাতি ৫৪ বছরে বিভিন্ন শাসন দেখেছে, জাতি এখন মুখিয়ে আছে নতুন শাসন ব্যবস্থায় নতুন বাংলাদেশের দিকে। জাতি পুরোনো ব্যবস্থাকে পায়ের নিচে দিয়ে মাড়িয়ে নতুন ব্যবস্থায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা কারো সঙ্গে কোনো ধরনের আপস করব না।
‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে অনেকেই বিভিন্নভাবে আপস করলেও জামায়াতে ইসলামীর আপসের কোনো ইতিহাস নেই’- উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কাছেও বিভিন্নভাবে আপসের প্রস্তাব এসেছে, চাপও এসেছে। তবুও আমরা কারো কাছে মাথানত করিনি।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের অফিস সেক্রেটারি কামরুল আহসান হাসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জসিম উদ্দিন সরকার, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমেদ প্রমুখ।