ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুত্থানের নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আগামী ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। তার নেতৃত্বে এবং ভবিষ্যতে জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির চতুর্থ প্রজন্ম দেশের সামনে এগিয়ে আসবে।’
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে আলাল বলেন, ‘এটি ফ্যাসিস্ট শক্তির কুটিল ও পরিকল্পিত চক্রান্ত। শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম জনগণের স্মৃতি ও রাষ্ট্রীয় পরিচয় থেকে মুছে ফেলতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে জিয়াউর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘‘শহিদ জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধীদল সর্বসম্মতভাবে ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম ‘জিয়াউর রহমান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ রাখা হয়েছিল। ‘জেডআইএ’ সংক্ষিপ্ত নামটি মানুষের পাসপোর্টের সিল ও আগমন-বহির্গমন ঘোষণায় নিয়মিত উচ্চারিত হতো, যা তৎকালীন সরকারপ্রধান সহ্য করতে পারেননি।’’
প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে উল্লেখ করে আলাল বলেন, ‘এটি কোনো সম্মান বা শ্রদ্ধা থেকে নয়, বরং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ইতিহাস বিকৃতির নগ্ন প্রচেষ্টা।’
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত ইতিহাস অনুযায়ী শহিদ জিয়াউর রহমান ছিলেন প্রথম ফোর্স কমান্ডার ও প্রথম সেক্টর কমান্ডার। তিনি বীর উত্তম খেতাব অর্জন করেছিলেন, উপহার হিসেবে পাননি।’
খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাসভবন থেকে উচ্ছেদের বিষয়টি উল্লেখ করে আলাল বলেন, ‘যিনি এই উচ্ছেদ করেছিলেন, তাকেই শেষ পর্যন্ত জনগণ দেশ থেকে উৎখাত করেছে। অথচ বিএনপির নেতৃত্ব সব সময় জনগণের পাশেই থেকেছে।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃতি, কপটতা ও প্রতিহিংসার রাজনীতির মাধ্যমে জনগণের ওপর শাসন কায়েম করা হয়েছিল, যার ফলেই জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক রাজনীতি নিয়েও সমালোচনা করে আলাল বলেন, ‘দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জয় পেলেই জাতীয় নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় না। বিএনপি সব সময় শান্তিপূর্ণ, মার্জিত ও গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা হচ্ছে জনগণের জাতীয় মুক্তির সনদ। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই তারেক রহমান দেশে ফিরছেন।’
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার এবং ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিলসহ অন্যান্য নেতারা।