নোয়াখালী: হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের জাগলার চর দখলকে কেন্দ্র করে সংঘটিত গোলাগুলির ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬ জনে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ সামছুদ্দিন ওরফে কোপা সামছু (৫৫) নামে আরও এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চরের জঙ্গল এলাকা থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইফুল আলম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে নিহত সামছুদ্দিনের ছোট ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শুক্রবার দুপুরে সামছুদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।
পুলিশ সূত্র জানায়, জাগলার চরে বর্তমানে কয়েক শত ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছে। চরের অর্ধেক জমি খাস এবং বাকি অর্ধেক ব্যক্তি মালিকানাধীন বা বয়ার সম্পত্তি। দীর্ঘদিন ধরে হাতিয়ার হরণি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিক ও ফরিদ কমান্ডার (মেম্বার)-এর নেতৃত্বে সামছুদ্দিন চরের জমি দখল করে প্রতি একর ২২ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকায় ভূমিহীনদের কাছে বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ওই অর্থ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে আলা উদ্দিন, শীর্ষ ডাকাত কাউয়া কামাল ও নিজাম মেম্বারের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অস্ত্রধারী জাগলার চরে দখল নিতে গেলে সামছুদ্দিনের লোকজনের সঙ্গে গোলাগুলি শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন।
একপর্যায়ে গোলাগুলিতে টিকতে না পেরে সামছুদ্দিনের অধিকাংশ লোক পালিয়ে যান। সংঘর্ষের মধ্যে সামছুদ্দিন আলা উদ্দিনকে গুলি করলে পরে আলা উদ্দিনের লোকজন সামছুদ্দিন, তার ছেলে মোবারক ও কর্মী জুম্মাসহ কয়েকজনকে গুলি, কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। এতে সামছুদ্দিন, তার ছেলে মোবারক ও কর্মী জুম্মাসহ তার পক্ষের পাঁচজন নিহত হন। পরে বিকেলে আহত আলা উদ্দিনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।