Saturday 27 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

একীভূত পাঁচ ব্যাংকের ব্রোকার হাউজের কার্যক্রম চলবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:৫৮

-ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক নামে একীভূত হওয়া পাঁচটি শরীয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকের ব্রোকারেজ হাউজগুলো পুঁজিবাজারে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ব্যাংকগুলো একীভূত হওয়ার পর তাদের সহযোগী (সাবসিডিয়ারি) ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা নিরসনে বিএসইসি’র একাধিক কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফায় কমিশনের আটজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়—একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর নামে ইস্যু করা স্টক-ব্রোকার, স্টক-ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকার নিবন্ধন সনদ নিয়মিতভাবে নবায়ন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, এক্সিম ব্যাংক পিএলসি এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।

এই ব্যাংকগুলোর কয়েকটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে কমিশনের নিবন্ধন বিভাগ থেকে স্টক-ব্রোকার, স্টক-ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকার হিসেবে নিবন্ধন সনদ পেয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) হতে এসআইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের (ডিএসই ট্রেক নম্বর ৯৪, সিএসই ট্রেক নম্বর ১৪২) স্টক-ব্রোকার ও স্টক-ডিলার নিবন্ধন সনদ নবায়ন সংক্রান্ত আবেদন কমিশনে দাখিল হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নিবন্ধন বিভাগ বর্তমানে একীভূত হওয়া পাঁচটি ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের নামে ইস্যুকৃত স্টক-ব্রোকার, স্টক-ডিলার এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার নিবন্ধন সনদ নবায়ন আবেদন প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ে আলোচনা ও সুপারিশ প্রদানের জন্য বিষয়টি বিএসইসির এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটির কাছে পাঠায়। ফলে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।

পরবর্তীতে কমিশনের গঠিত কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ পর্যালোচনা করে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলোর সাবসিডিয়ারি কোম্পানির ক্ষেত্রেও অধ্যাদেশটি প্রযোজ্য হলেও, বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কমিশনকে এখনো কোনো নির্দেশনা দেয়নি। ফলে সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে বৈধ ও কার্যকর অবস্থায় রয়েছে।

ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ বিশ্লেষণ করে বিএসইসি’র গঠিত কমিটির সুপারিশ

বর্তমানে একীভূত হওয়া পাঁচটি ব্যাংকের যেসব সাবসিডিয়ারি কোম্পানির নামে স্টক-ব্রোকার, স্টক-ডিলার এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার নিবন্ধন সনদ ইস্যু করা হয়েছে, উক্ত অধ্যাদেশ তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এছাড়া, অধ্যাদেশের ধারা ২ অনুযায়ী, ধারা ১ এর উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত কোনো কোম্পানি বা সত্তা যদি বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যতীত অন্য কোনো নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়, তবে উক্ত কোম্পানি বা সত্তা সম্পর্কিত বিষয়ে এই অধ্যাদেশের অধীন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করবে এবং গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে উক্ত নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে। যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কমিশনকে কোনো কিছু অবহিত করেনি, সেহেতু প্রতীয়মান হয় যে, সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহ বর্তমানে বহাল এবং কার্যকর রয়েছে। অতএব, এ পর্যায়ে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে স্বপ্রণোদিত হয়ে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা নেই।

কেবল একীভূত হওয়ার কারণেই কোনো সাবসিডিয়ারি ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন সনদ নবায়ন স্থগিত বা বাতিল করা যুক্তিসঙ্গত নয়। বরং নিবন্ধন নবায়নের মূল বিবেচ্য বিষয় হবে—প্রচলিত সিকিউরিটিজ আইন, বিধি-বিধান ও যোগ্যতার শর্ত পূরণ।

নিবন্ধন নবায়ন না হলে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজগুলোর গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীরা শেয়ার লেনদেন, বিও অ্যাকাউন্ট সেবা, মার্জিন সুবিধা এবং অন্যান্য বিনিয়োগ সংক্রান্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন—যা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী।

সব দিক বিবেচনায় কমিশনের কমিটি মত দিয়েছে—এসআইবিএল সিকিউরিটিজসহ একীভূত ব্যাংকগুলোর অন্যান্য সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন সনদ আইন ও বিধি মেনে স্বাভাবিক নিয়মেই নবায়ন করা যেতে পারে।

ভবিষ্যতে একীভূতকরণজনিত কোনো জটিলতা দেখা দিলে আইনগত মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও থাকবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, একীভূত হওয়ার কারণেই কোনো সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করা বা নিবন্ধন নবায়ন না করা যৌক্তিক নয়। যদি সংশ্লিষ্ট ব্রোকার হাউজগুলো প্রচলিত আইন, বিধি ও যোগ্যতার শর্ত পূরণ করে, তাহলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সুযোগ দেওয়া হবে। কমিশনের মূল বিবেচনা হচ্ছে বাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রম এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।”

বিজ্ঞাপন

প্রাণিপ্রেমী তারেক রহমান
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:৩০

আরো

সম্পর্কিত খবর