Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে : পায়েলের বাবা


৩১ জুলাই ২০১৮ ১৫:১৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাসের ড্রাইভার-হেল্পাররা পরিকল্পিতভাবে ছেলেকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েলের বাবা গোলাম মওলা। মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) পায়েল মৃত্যুর প্রতিবাদ ও ক্ষতিপূরণ দাবিতে সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম নামে একটি সংগঠনের মানববন্ধ ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

পায়েলের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে কোন অন্যায় করেনি। তার কোন অপরাধ ছিল না। বাসের ড্রাইভার-হেল্পাররা পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমার ছেলের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি আমি করছি।’

সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম বেলায়েত হোসেন বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কলঙ্কজনক উক্তি করেছেন। এই কলঙ্কজনক বক্তব্যের জন্য শাজাহান খানকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, পায়েলের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার বিচার যেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হয়, সেই দাবি জানাচ্ছি। হানিফ পরিবহনকে বলছি, অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ান। তাদের সহানুভূতি জানান। ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।

তিনি আরও বলেন, অন্যথায় আমি হানিফ পরিবহনের কোনো গাড়ি আমরা রাস্তায় নামতে দেব না। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, রাস্তায় হানিফের কোন গাড়ি চলতে দেব না।

পিপলস ভয়েস, চট্টগ্রামের সভাপতি শরীফ চৌহান বলেন, সড়কে মানুষ মারা যাচ্ছে আর আমাদের মন্ত্রী শাজাহান খান হেসে হেসে কথা বলছেন। তার হাসি দেখে মনে হয়েছে তিনি জাতির সঙ্গে ঠাট্টা করছেন। তিনি শ্রমিক নেতা হয়ে সড়কের ঘাতকদের রক্ষাকবচ হবেন, জাতির সঙ্গে ঠাট্টা করবেন আর জনগণ তাকে বাহবা দেবে, এটা তিনি মনে করলে ভুল করছেন।

বিজ্ঞাপন

চৌহান বলেন, দেশে প্রতিদিন গড়ে ১২ জন করে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। অথচ এসব ঘটনার কোন বিচার হচ্ছে না। এর ফলে সড়কে আইন না মেনে গাড়ি চালাতে প্রশ্রয় পাচ্ছেন চালকরা। এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।

কর্মসূচির সঞ্চালক ও দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সারোয়ার সুমন বলেন, পায়েলকে নৃশংসভাবে হত্যার বিচারের দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমরা কোথাও একটি ঢিলও ছুড়িনি। আমরা প্রশাসনের প্রতি আস্থাশীল। কিন্তু যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেই হানিফ পরিবহন এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ন্যূনতম সহানুভূতি পর্যন্ত দেখায়নি। সামান্যতম আন্তরিকতাও প্রদর্শন করেনি। আমরা হানিফ পরিবহনের বাস বর্জনের জন্য দেশের সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি।

সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশনের সংগঠক, পায়েলের স্বজন ও সহপাঠীরা মিছিল নিয়ে হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ঘেরাওয়ের জন্য গেলেও পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাধা পেয়ে তারা হানিফ পরিবহনের বিপরীতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, পায়েলের মামা সরওয়ার্দী বিপ্লব, কামরুজ্জামান টিটু ও ফাহাদ চৌধুরী টিপু বক্তব্য রাখেন।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র পায়েল চট্টগ্রামের হালিশহরের গোলাম মাওলার ছেলে। শনিবার রাতে হানিফ পরিবহনের (নং ৯৬৮৭) বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছিলেন। ভোর রাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হন।

গত সোমবার (২৩ জুলাই) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গজারিয়া উপজেলার ভাটেরচর সেতুর নিচে খালে তার লাশ পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় তার মামা গোলাম সোরয়ার্দী বিপ্লব তিন জনকে আসামি করে গজারিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।

পরে পুলিশ হানিফ পরিচবহনের বাসের সুপারভাইজার জনিকে মঙ্গলবার রাতে ঢাকার মতিঝিল এলাকা এবং বুধবার ঢাকার আরামবাগ থেকে চালক জামাল হোসেন এবং হেলপার মো. ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) চালক জামাল হোসেন মুন্সীগঞ্জের একটি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, চালক জবানবন্দিতে জানিয়েছেন- বাসের অটো দরজার সাথে ধাক্কা লেগে পায়েল রাস্তায় পড়ে যায়। এতে তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকলে মারা গেছে ভেবে তাকে পাশের ভাটেরচর সেতু থেকে নিচের খালে ফেলে দিয়ে, তারা গাড়ি চালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন।

সারাবাংলা/আরডি/এনএইচ

ছাত্র আন্দোলন সড়ক দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর