লামায় মা ও শিশু হাসপাতালে নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:২৭
।। মো. ফরিদ উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
বান্দরবান : স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের (এইচইডি) আওতায় লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতালের নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কার্যাদেশ না মেনে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে ভবন নির্মাণে।
জানা গেছে, সরই এলাকার জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে গত ২৫ মে ২০১৭ সালে ১০ শয্যা মা ও শিশু হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি নির্মাণ করছে বান্দরবানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা।
৪ কোটি ৪ লাখ টাকার চুক্তিমূল্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজটি করছে বান্দরবানের ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ ও ইমতিয়াজ। ১০ শয্যা হাসপাতাল ভবন, স্টাফ কোয়াটার ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুরু থেকেই নির্মাণ কাজে অনিয়ম করা হচ্ছে। পাইলিং, বেইজ ও পিলারসহ অধিকাংশ বড় কাজের সময় স্বাস্থ্য প্রকৌশলের কোনো ইঞ্জিনিয়ার সাইটে ছিলেন না। ঠিকাদার ও মিস্ত্রিরা নির্মাণ কাজে নিম্নমানের পাথর, রড, সিমেন্ট ও আশপাশের ঝিরির ছড়া থেকে তোলা কাদাযুক্ত বালু ব্যবহার করেছে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, সরকারের কাছ থেকে যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে, তারা এই কার্যাদেশ টাকা নিয়ে অন্য ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ ও ইমতিয়াজ বেশি টাকা দিয়ে কাজটি কেনায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে।
সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ-উল-আলম জানান, হাসপাতাল নির্মাণে কাজের মান ভালো না। কাজের মান ভালো করতে আমি ঠিকাদার ও স্বাস্থ্য বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারকে বারবার বলেছি। তাদের বলেও কোনো লাভ হয়নি। কয়েকদিন আগে কক্সবাজার থেকে ইঞ্জিনিয়ার মোর্শেদ এসেছিলেন। তাকে মৌখিকভাবে অনিয়মের বিষয়ে বলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।’
নির্মাণকাজের মান বিষয়ে সাইটের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ ও ইমতিয়াজ সাহেব যেভাবে বলেন আমি সেভাবে কাজ করি।’
তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ। তিনি বলেন, ‘কাজের মান খারাপ হচ্ছে না।’
নির্মাণ কাজের দায়িত্বরত স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের কক্সবাজারের সহকারী প্রকৌশলী মো. মোর্শেদ বলেন, ‘আমি যখন গিয়েছিলাম তখন তো মালামাল ভাল দেখেছি। সবসময় থাকার তো সুযোগ নেই।’
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর বান্দরবানের উপ-পরিচালক ডা. অংচালু মার্মা বলেন, ‘কিছুদিন আগে কাজের মান খারাপ হচ্ছে শুনে মান ভালো করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। আবারো জেনে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সারাবাংলা/এমও