বৃহস্পতিবার ভোরে উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত হানবে ‘তিতলি’
১০ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:২৭
।। সারাবাংলা ডেস্ক।।
পশ্চিম ও মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ বৃহস্পতিবার ভোররাতে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত আনবে, জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এদিকে তিতলির প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে এবং উপকূলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন জানিয়েছেন, তিতলি একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তবে এটি যদি আর দিক পরিবর্তন না করে তবে তার প্রাথমিক আঘাত ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে হবে। সারাবাংলাকে তিনি জানান, এর মধ্যেই তিতলি প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তিনি আরও আশা করেন, স্থলভাগে আঘাত করার পরে ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি অনেকটাই প্রশমিত হবে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত নাগাদ এটি বাংলাদেশের সীমান্তে প্রবেশ করবে।
তিতলিতে বিক্ষুব্ধ সাগর, উপকূলে ৪, নদীতে ২ নম্বর সংকেত
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের সবশেষ সিনপটিক অবস্থা অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় তিতলি কিছুটা উত্তর দিকে সরে একই স্থানে অবস্থান করছে। এর আগে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর পাশের পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’তে পরিণত হয়। এটি আরও উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে আজ (বুধবার) সকাল ৬টায় পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর আশে পাশের এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়।
বুধবার (১০ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত ঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৯১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৭০ থেকে কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঝড়টির কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে যা ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
তিতলির কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর এলাকায় ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
পূর্বাভাস বলছে, তিতলির প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তিতলির প্রভাবে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপর দিয়ে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোতে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এ ছাড়া দেশের অন্য অংশে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আগামীকাল (১১ অক্টোবর) রাত ১টা পর্যন্ত সতর্ক থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
সারাবাংলা/এমএ/এমআই