বিশ্ব খাদ্য দিবসে ২০৩০ সালে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়
১৬ অক্টোবর ২০১৮ ১১:২৭
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব খাদ্য দিবস।
এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ‘কর্ম গড়ে ভবিষ্যৎ, কর্মই গড়বে ২০৩০-এ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব’।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পরিবর্তিত জলবায়ু সহনশীল লাগসই ফসল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উৎপাদনে প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত বিবেচনায় নিয়ে এ দেশের গ্রামীণ কৃষিনির্ভর অর্থনীতিকে সুদৃঢ়করণের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্যবলয় তৈরি করা প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে জনগণের পুষ্টি চাহিদা পূরণে কৃষিবিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আবহমানকাল থেকেই কৃষি বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করেন এবং তাদের জীবনমান কৃষিনির্ভর। তাই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অত্যধিক।
দেশে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০১৮’ উদযাপনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী দেশ। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে কৃষি খাতে এ অর্জন ধরে রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
আবদুল হামিদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে কৃষির অগ্রযাত্রা বিশ্বব্যাপী অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করে বলেন, সবার সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতাকে টেকসই রূপ দিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
বাণীতে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে কৃষিক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ধান, পাট, আলু, সবজি, ফলসহ মাছ, মাংস উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আজ বিশ্ব স্বীকৃত।
তিনি বলেন, ‘আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সেলক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বর্তমান সরকারের মেয়াদে কৃষির সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে কৃষিবান্ধব নীতি ও সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সার, বীজসহ সব কৃষি উপকরণের মূল্যহ্রাস করেছি। কৃষকদের সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণসুবিধা এবং বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। আমরা কৃষি গবেষণায় আরও বেশি বরাদ্দ নিশ্চিত করে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছি।
কৃষি খাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৃহীত উদ্যোগের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। তিনি কৃষকদের জন্য ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিকদের খাজনা মওকুফ করে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষের গুরুত্ব অনুধাবন করে দেশকে আবারও সবুজের সমারোহে পরিপূর্ণ করে তুলতে বৃক্ষরোপণ অভিযান কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটির সাফল্য কামনা করেন।
দিবসটি উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কৃষি মন্ত্রণালয় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সেমিনার ও তিন দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করেছে।
দিবসটিকে সামনে রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ও। সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৩টায় নির্ধারিত প্রতিপাদ্যের ওপর কেআইবি অডিটরিয়ামে আয়োজন করা হয়েছে সেমিনার।
এছাড়া কেআইবি অডিটরিয়াম চত্বরে তিন দিনব্যাপী খাদ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলা চলবে আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর