Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হরেক রকম পিঠা সাথে নানা পদের ভর্তা


২৬ নভেম্বর ২০১৮ ১০:৩৩

।। হাবিবুর রহমান, ফটো করেসপন্ডেন্ট ।।

ঋতুচক্র অনুযায়ী শীতকাল এখনো শুরু হয়নি। তবে গ্রাম আর শহরের অলিগলি এরইমধ্যে পাচ্ছে শীতের পরশ। সেইসঙ্গে, শুরু হয়েছে পিঠা উৎসব। পিঠা-পুলির এই বাংলায় গ্রামাঞ্চলে পিঠার আয়োজন হয়ে থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে ঐতিহ্যবাহী এসব পিঠা থেকে একবারে বঞ্চিত হচ্ছেন না নগরবাসীও।

শহরের অলিতে-গলিতে কিংবা রাস্তার মোড়ে শীতের বিকেল বা সন্ধ্যায় গন্ধ ছড়াচ্ছে ধোঁয়া উঠা নানা স্বাদের হরেক রকম পিঠা ও সাথে নানা পদের ভর্তা। সুযোগ পেলেই, প্রেমিক যুগল, বন্ধুরা বা পরিবারের সবাই মেতে উঠছেন পিঠা খাওয়ার এই উৎসবে।

রাজধানী ঢাকাতে শীতের রস দিয়ে তৈরি পিঠা খাওয়ার সুযোগ না থাকলেও হাতের নাগালেই মিলছে গরম গরম চিতই, ভাপা আর তেলের পিঠা। শীতের মৌসুমে গড়ে উঠা এসব পিঠার দোকানিদের কেউ কেউ শুধু পিঠা বিক্রির ওপর নির্ভর করেই চালাচ্ছেন সংসার।

গ্রিনরোডের পাশেই পসরা বসিয়ে অলি আহম্মদ নামের এক দোকানি পিঠা বিক্রি করেন চৌদ্দ বছর ধরে। সেখানে দেখা গেল, দোকানের কর্মচারী জাহাঙ্গীর হোসেন চালের গুঁড়া, গুড়, ভর্তা আর সবুজ রঙা প্লাস্টিকের পিরিচ সাজাতে ব্যস্ত। এরপর গরম কড়াইয়ে চালের গোলা দিয়ে ঢেকে দেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ক্রেতারা ভিড় জমান। পত্রিকায় ঢাকা পিরিচে গরম পিঠা তুলে নেন ক্রেতারা। পিঠার কোনা ভেঙে ভর্তা মিশিয়ে তৃপ্তি নিয়ে খান তারা।

আরও পড়ুন: আসছে শীত, জমছে পিঠার আসর

অলি আহম্মদ জানান, ভাপা, পুলি ও চিতই তিনরকম পিঠা বিক্রি করেন তিনি।  প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার পিঠা বিক্রি হয়। পথে পিঠা বিক্রি করেই দৈনিক দুই-তিন হাজার টাকা উপার্জন হয় তার।

পিঠার সাথে সরিষা, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ, কালোজিরা, চ্যাপা শুঁটকি, নোনা ইলিশ, চিংড়ির শুঁটকি, ডাল ভর্তা ক্রেতাদের বেশি পছন্দের। জাহাঙ্গীর বলেন, এসব ভর্তা মেশিনেই বানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

পিঠা ক্রেতা মো. রফিক উদ্দিন সপ্তাহ খানেক ধরে বাসায় ফেরার পথে দুটি চিতই ও একটা ভাপা পিঠা খাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘পুরো শীতকাল সন্ধ্যার নাশতা পিঠা দিয়েই সারি।’

তার পাশ থেকে আরেকজন বলেন, ‘ঘরে পিঠা বানানোর রীতি উঠে গেছে। সেটা পুষিয়ে দেয় রাস্তার পাশের এই দোকানগুলো।’

পিঠা খেতে আসা শহরের আরো অনেক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের প্রতিটি অলিতে গলিতে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিকেল থেকেই বসছে পিঠার দোকান। নগরীর কমবেশি সবাই দোকানে তৈরি হওয়া শীতের পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন। একটা উৎসব মুখর পরিবেশে এক সাথে পিঠা খেতে সবার ভালোই লাগে।

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২, সোবাহানবাগ, কলাবাগান, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, কাজীপাড়া, মিরপুর, মহাখালী, বাংলা মোটর, শাহবাগ, টিএসসির মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তার ফুটপাতে ও সড়কের মোড়ে শেষ বিকেল অথবা শীতের সন্ধ্যায় বসে এসব পিঠার দোকান।

এছাড়া পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারেও রয়েছে বেশ কিছু পিঠাপুলির দোকান। মৌসুমি চিতই ও ভাপা ছাড়াও বিভিন্ন রকমের নারিকল পুলি পাওয়া যায় এখানকার দোকানগুলোতে।

গ্রামাঞ্চলে লাকড়ির চুলাতে বেশ মজা করে তৈরি হলেও শহরে শীতের পিঠার আয়োজন হয় গ্যাস বা কেরোসিনের চুলায়। পছন্দের পিঠা যার যেমনই হোক না কেন, পিঠা খাওয়ার মাধ্যমে আনন্দ ভাগাভাগি করা অথবা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতিটি মুহূর্ত রচিত হয় ব্যস্ত এই নাগরিক জীবনে।

সারাবাংলা/এইচআর/এনএইচ

নাগরিক জীবন শীতকাল শীতের পিঠা

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর