প্রথম দিনের ১৬০ আপিলে ৮১ জনের মনোনয়ন বৈধ
৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:৫৮
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৬০টি আপিলের শুনানি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম দিনের এসব শুনানি শেষে ৮১ জনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ৭৯টি আপিলে ৭৭টি মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল আছে। দুইটি মনোনয়নপত্র বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে ইসি।
আরও পড়ুন- আপিলেও বাতিল মীর নাসির, দুলু ও টুকুর মনোনয়নপত্র
বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে সকাল ১০টায় শুরু হয় আপিল শুনানি। এসময় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী আপিল শুনানি করছেন। এজলাসে ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদও উপস্থিত ছিলেন।
আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন যারা
আপিল শুনানির প্রথম দিনের শুরুতেই প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোর্শেদ মিল্টন, ঢাকা-২০ আসনে ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. তমিজ উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি, ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী আব্দুল মজিদ ও ঢাকা-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক।
এরপর একে একে জামালপুর-৪ আসনে ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, পটুয়াখালী-৩ আসনে মোহম্মদ শাহজাহান, পটুয়াখালী-১ আসনে মো. সুমন সন্যামত, মাদারিপুর-১ আসনে জহিরুল ইসলাম মিন্টু, সিলেট-৩ আসনে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, জয়পুরহাট-১ আসনে ফজলুর রহমান, পাবনা-৩ আসনে হাসাদুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ-২ আসনে আবিদুর রহমান খান, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে আয়নাল হক, গাজীপুর-২ আসনে মাহবুব আলম, গাজীপুর-২ আসনে জয়নাল আবেদীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে জেসমিন নূর বেবী, রংপুর-৪ আসনে মোস্তফা সেলিম, খুলনা-৬ আসনে এস এম শফিকুল আলম, হবিগঞ্জ-১ আসনে জুবায়ের আহমেদ, ময়মনসিংহ-৭ আসনে জয়নাল আবেদীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আবদুল্লাহ আল হেলাল, ঝিনাইদহ-৩ আসনে কামরুজ্জামান স্বাধীন, কুমিল্লা-৩ আসনে কে এম মুজিবুল হক, মানিকগঞ্জ-১ আসনে মো. তোজাম্মেল হক, সিলেট-৫ আসনে ফয়জুল মুনীর চৌধুরী, ময়মনসিংহ-৩ আসনে আহাম্মদ তায়েবুর রহমান, ঝিনাইদহ-৪ আসনে আব্দুল মান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে সৈয়দ আনোয়ার আহাম্মদ লিটন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে মামুনুর রশিদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আবু আসিফ, ঢাকা-১৪ আসনে জাকির হোসেন ও ময়মনসিংহ-২ আসনে মো. আবু বকর সিদ্দিক প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
এদিন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াদের তালিকায় আরও আছেন শেরপুর-২ আসনে এ কে মুখলেসুর রহমান, হবিগঞ্জ-৪ আসনে মাওলানা মোহাম্মদ সোলায়মান খান রাব্বানী, নাটোর-৪ আসনে আলাউদ্দিন মৃধা, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মো. ইউনুছ আলী, বরিশাল-২ আসনে আনিচুজ্জামান, ঢাকা-৫ আসনে সেলিম ভূঁইয়া, পঞ্চগড়-২ আসনে মো. ফরহাদ হোসেন, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে মো. আতাউর রহমান, ময়মনসিংহ-৮ আসনে এম এ বাশার, ঢাকা-১৪ আসনে সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে আব্দুল খালেক, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মো. মাহফুজার রহমান, চট্টগ্রাম-১ আসনে নূরুল আমিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মুখলেসুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-১ আসনে মো. মাহবুব আলম, কুমিল্লা-৫ আসনে মো. ইউনুছ, চাঁদপুর-৫ আসনে মো. নেয়ামুল বশির, বরিশাল-২ আসনে মোয়াজ্জেম হোসেন, চট্টগ্রাম-৩ আসনে মোস্তফা কামাল পাশা, রংপুর-১ আসনে মো. আসাদুজ্জামান, গাইবান্ধা-৩ আসনে মো: আবু জাফর, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে শাহ আলম, গাইবান্ধা-৩ আসনে মো. রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধা-৫ আসনে মো. নাজিবুল ইসলাম (শর্ত সাপেক্ষে), যশোর-৬ আসনে সাইদুজ্জামান, নড়াইল-২ আসনে ফকির শওকত আলি, নাটোর-৪ আসনে আব্দুল আজিজ, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে এম এ মুহিত, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে আব্দুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে মেজর (অব.) মনজুর কাদের, বগুড়া-৫ আসনে মো. আব্দুর রউফ মন্ডল জন, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে মো. হাবিবুর রহমান, বগুড়া-২ আসনে শফিকুল ইসলাম, বগুড়া-৬ আসনে মোহাম্মদ ফয়সাল বিন, রাজশাহী-১ আসনে মো. আমিনুল হক, দিনাজপুর-১ আসনে মোহাম্মদ হানিফ, গাইবান্ধা- ৩ আসনে আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-৮ আসনে এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম-১০ আসনে মো. আনিছুর রহমান, গাইবান্ধা-৪ আসনে আব্দুর রহিম সরকার, কুমিল্লা-১১ আসনে মো. তাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-৯ আসনে মোহাম্মদ দুলাল খান ও ঝিনাইদহ-৩ আসনে মো. কামরুজ্জামান স্বাধীন।
আপিলেও মনোনয়নপত্র বাতিল যাদের
এদিকে, আপিল শুনানিতেও যাদের মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল আছে, তাদের মধ্যে আছেন— নাটোর-২ আসনে মো. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে মো. শামসুল হুদা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মো. তৈয়ব আলী, মাদারিপুর-৩ আসনে মো. আবদুল খালেক, দিনাজপুর-২ আসনে মোকারম হোসেন, দিনাজপুর-১ আসনে মো. পারভেজ হোসেন, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে এস এম খলিলুর রহমান, ফেনী-১ আসনে মিজানুর রহমান, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে ড. মিজানুল হক, ময়মনসিংহ-৪ আসনে আবু সাইদ মহিউদ্দিন, নেত্রকোনা-১ আসনে মো. নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ-২ আসনে এমদাদুল হক, খুলনা-২ আসনে এস এম এরশাদুজ্জামান, নাটোর-১ আসনে বীরেন্দ্র নাথ সাহা, ঢাকা-১ আসনে আইয়ুব খান, বগুড়া-৩ আসনে আবদুল মুহিত, রাঙামাটি আসনে অমর কুমার দে, বগুড়া-৪ আসনে আশরাফুল হোসেন আলমের (হিরো আলম), হবিগঞ্জ-২ আসনে মো. জাকির হোসেন, ঢাকা-১৪ আসনে সাইফুদ্দিন আহমেদ, সাতক্ষীরা-১ আসনে এস এম মুজিবর রহমান, খাগড়াছড়ি আসনে আবদুল ওয়াদুদ ভুইয়া, ঝিনাইদহ-১ আসনে আবদুল ওয়াহাব, দিনাজপুর-৩ আসনে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, পঞ্চগড়-১ আসনে মো. তৌহিদুল ইসলাম, বগুড়া-৬ আসনে এ কে এম মাহবুবুর রহমান, ফেনী-৩ আসনে হাসান আহমদ ও মৌলভীবাজার-২ আসনে মহিবুল কাদির চৌধুরী।
এই তালিকায় আরও আছেন খাগড়াছড়ির আব্দুল ওয়াদুদ ভূইয়া, ঝিনাইদহ-১ আসনে আবদুল ওহাব, সাতক্ষীরা-২ আসনে আফসার আলি, ঢাকা-১৪ আসনে সাইফুদ্দিন আহমেদ, সাতক্ষীরা-১ আসনে এস এম মুজিবর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে মো. বশির উল্লাহ, নওগাঁ-৪ আসনে মো. আফজাল হোসেন, ময়মনসিংহ-১০ আসনে মো. হাবিবুল্লাহ, জামালপুর-৪ আসনে মোহা. মামুনুর রশিদ, বগুড়া-২ আসনে আব্দুল কাশেম, নীলফামারী-৪ আসনে মো. আমজাদ হোসেন, নীলফামারী-৩ আসনে মো. ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী, নীলফামারী-৪ আসনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্যোসাল ইসলামী ব্যংক লিমিটেড, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আখতার হোসেন, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আবুল ফয়েজ ভূইয়া, কুমিল্লা-১০ আসনে আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা-২ আসনে মো. সারওয়ার হোসেন, কুমিল্লা-৪ আসনে মাহবুবুল আলম, নোয়াখালী-৩ আসনে এইচ আর এম সাইফুল ইসলাম, ফেনী-১ আসনে মো. নূর আহমদ মজুমদার, গাইবান্ধা-২ আসনে মো. মকদুবর রহমান, লালমনিরহাট-১ আসনে আবু হেনা মো. এরশাদ হোসেন, গাইবান্ধা-৩ আসনে মো. মনজুরুল হক, নীলফামারী-৪ আসনে আখতার হোসেন বাদল, লালমনিরহাট-৪ আসনে মো. জাহাঙ্গীর আলম, নীলফামারী-৪ আসনে মিনহাজুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মো. আবুল হাশেম, রংপুর-৫ আসনে মমতাজ হোসেন, কুড়িগ্রাম-১ আসনে মো. ওসমান গণি, বাগেরহাট-৪ আসনে আমিনুল ইসলাম, মাগুরা-২ আসনে খন্দকার মেহেদী আল মাসুদ, যশোর-২ আসনে মোসা. সাবিরা সুলতানা, নড়াইল-১ আসনে শিকদার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, যশোর-২ আসনে হাজী মোহাম্মদ মহিদুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা-১ শেখ মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম। এসব প্রার্থীর আপিল গ্রহণ করা হয়নি। তাদের মনোনয়নপত্র চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শুরু করে দুপুর ২টা পর্যন্ত একটানা ১০০ জন প্রার্থীর আপিল শুনানি নেয় ইসি। এর মধ্যে ৫৬ জনের আপিল গ্রহণ করে তাদের বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এরপর মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে বিকেল ৩টা থেকে ফের আপিল শুনানি শুরু হয়, চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
এর আগে, গত ২৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমাদান প্রক্রিয়া শেষে ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এতে ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এর মধ্যে ৫৪৩টি মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা। আজ থেকে শুরু হয়েছে এসব আপিলের শুনানি। চলবে আগামীকাল শুক্রবার ও পরশু শনিবার পর্যন্ত।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর