Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাসচাপায় ২ পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু: মালিবাগে বাসে আগুন, ভাঙচুর


১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:০২

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: রাজধানী মালীবাগে যাত্রীবাহী বাসচাপায় দুই পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন নাহিদ পারভিন পলি (২০) ও মিম আক্তার (১৪)। এ ঘটনায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে রেখেছেন। এসময় তারা বেশ বাস ভাঙচুরও করেন। মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে মালিবাগের আবুল হোটেলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। বাসচাপায় দুই পোশাক শ্রমিক নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামপুরা জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট শুভ কুমার দে।

বিজ্ঞাপন

ট্রাফিক সার্জেন্ট জানান, দুপুরে মালিবাগ আবুল হোটেলের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস পোশাক শ্রমিক মিম ও পলিকে চাপা দেয়। এ সময় ঘটনাস্থলে মারা যান মিম। গুরুতর আহত অবস্থায় পলিকে ঢামেক হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় চালককে আটকসহ বাসটি জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, সহকর্মীর মৃত্যুর খবর পেয়ে আশপাশের গার্মেন্টগুলো থেকে বেরিয়ে আসেন পোশাক শ্রমিকরা। এসময় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা মালিবাগ ও চৌধুরীপাড়া এলাকায় শতাধিক বাস ভাঙচুর করেছেন। তারা আবুল হোটেলের সামনে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন। তবে, পরবর্তী সময়ে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়।

এদিকে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় তাদের ছোঁড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে ট্রাফিক পুলিশের মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুন্নাহার আহত হন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চলছিল। তাদের বিক্ষোভের কারণে ওই সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। রামপুরা ব্রিজ থেকে মৌচাক পর্যন্ত সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভাঙচুর হওয়া বাসগুলো পুলিশের সহায়তায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফজলুল করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় বাসটি জব্দ ও চালককে আটক করা হয়েছে। তবে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করছেন। তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’ শিগগিরই যান চলাচল স্বাভাবিক হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিকেলে ৫টার দিকে মতিঝিল জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে  পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তিনি এসময় সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে শ্রমিকদের শান্ত করতে তাদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেছি। কিন্তু সহকর্মীদের মৃত্যুতে তারা খুবই সংঘুব্ধ। আর এটায় স্বাভাবিক। আমরা তাই প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে বলেছি, ধৈর্যের সংঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে। শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

ঘটনাস্থলে থাকা আরেক পুলিশ কর্মকর্তা তেজগাঁও জোনের ডিসি বিপ্লব কুমার সারাবাংলাকে বলেন, তিন ঘণ্টা ধরে আমরা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। আশা করছি খুব দ্রুত শ্রমিকদের সাথে সমোঝোতায় যেতে পারব, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

এদিকে, খবর পেয়ে ঢামেক হাসপাতালে ছুটে যান পলি ও মিমের সহকর্মীরা। সজল গায়েন নামের এক সহকর্মী জানান, পলি ও মিম রমনা মগবাজার পুর্ব নয়াটোলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তারা রামপুরা আল রাফি ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

 

পলির গ্রামের বাড়ি নীলরফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলায়। বাবার নাম এজাজ আহমেদ। মিমের গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার গাবতলি উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে। বাবার নাম সোনাই মোল্লা।

সারাবাংলা/এসএইচ/ইউজে/ এসআর/এমএনএইচ/এসএমএন

পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু বাসচাপা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর