চালের দাম কমবে কবে?
১১ জানুয়ারি ২০১৯ ২২:৫৮
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আপাতত চালের দাম কমছে না বলে মনে করছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা। তাদের ভাষ্য, তারা এখন যে দামে চাল বিক্রি করছেন, সেই দামই বহাল থাকবে। একইসঙ্গে তারা নতুন করে দাম বাড়ার আশঙ্কাও করছেন। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম দুই থেকে আড়াইশ এবং কেজি প্রতি চার থেকে পাঁচ টাকা করে বেড়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক বেড়ে যাওয়া চালের দাম নিয়ে বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) চালকল মালিকদের সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মনুশি বৈঠক করেছেন। তবে, ওই বৈঠকের পরও বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। কমেনি চালের দাম।
হঠাৎ করে চালের বাজার অস্থির হওয়ার কারণ হিসেবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালকল মালিকরা বাড়ানোর কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর চালকল মালিকরা বলছেন, বাজারে ধানের সংকট থাকায় এর প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। এদিকে, একসপ্তাহের মধ্যেই চালের দাম কমবে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মনুশি।
বাজারঘুরে দেখা গেছে, মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে বেশি। তবে নাজিরশাইল চালের দাম অপরিবর্তিত আছে। মিনিকেট চালের দাম বস্তাপ্রতি ২৫০ টাকা বেড়ে গেছে। সে হিসেবে নির্বাচনের আগের দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা এখন বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে।
ধান-চাল আড়তদার মালিক সমিতির একজন নেতা জানান, চিকন চালের এখন মৌসুম না হওয়ায় দাম বেড়েছে। তবে মার্চ মাস শেষ হলেই চিকন চালের দাম কমে আসবে। তখন বাজারে পর্যাপ্ত চিকন চাল উঠবে।
রাজধানীর বাড্ডার এক কাঁচাবাজারে বাজার করছেন আমিনুল ইসলাম। ব্যাংকে চাকরি বলে সপ্তাহের বাজার এই একদিন করে নেন তিনি। চালের বস্তা নির্বাচনের আগে যে দরে কিনেছিলেন, এখন বস্তাপ্রতি ৪০০ টাকা বেড়ে গেছে। দোকানদাররা তাকে বলছেন, সামনে আরও বাড়তে পারে। এ অবস্থায় বাড়তি দরেই চাল কিনেছেন তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘নভেম্বর মধ্যে আমন ধান কাটা শেষ হয়ে যায়। আর আমাদের (সরকার) চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত যদি ডিসেম্বরের শেষে দিকে বা মাঝামাঝি নিতে হয়, তাহলে প্রান্তিক চাষিরা কিছুতেই ফসলের ন্যায্যমূল্য পাবেন না। এটা কিন্তু আমাদের খাদ্য মন্ত্রণালয়কে মাথায় নিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘১ ডিসেম্বর কথা বলা হয়েছে। আমার মনে হয়, এই তারিখ আরও এগিয়ে আনতে হবে। কারণ নভেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে ধান কাটাই শেষ হয়ে যায়। মাঠে কোনো ধানই থাকে না।’
প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল সংগ্রহ শুরু করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছয় লাখ টনেরও বেশি আমন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।
চালের দাম কমানোর ব্যাপারে শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি চালের দাম বেড়ে যাওয়ার জন্য গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে দুই-তিন দিনের জন্য পরিবহন ঘাটতি ছিল। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চলের দাম কমে আসবে।’ তিনি ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বৃহস্পতিবার এই ব্যাপারে মিল মালিক ও ধান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও এসময় জানান তিনি।
সারাবাংলা/এসএ/এমএনএইচ