তথ্যমন্ত্রীকে ফুল দেওয়া নিয়ে হাতাহাতিতে ছাত্রলীগ
১৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৬:০০
।।স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে ফুল দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষ। মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই এই ঘটনার পর সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এদিন প্রথম জন্মস্থান চট্টগ্রামে আসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মন্ত্রী চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌঁছান। এর আগে থেকেই সেখানে নেতাকর্মীদের ভিড় ছিল। মন্ত্রী প্রথমে সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে এবং পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় সভাস্থলও ছিল নেতাকর্মীতে ভরা। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের শ’খানেক নেতাকর্মীও সেখানে ছিলেন।
মতবিনিময় শেষ করে মন্ত্রী চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদকে নিয়ে সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হন। তখন সার্কিট হাউজের সামনে নেতাকর্মীদের হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। ফুল দেওয়া, মোবাইলে ছবি তোলা নিয়ে হুলস্থলের মধ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়ান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মন্ত্রীর হাতে ফুল দেওয়ার সময়ই উত্তর জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হুড়োহুড়ি শুরু করেন। ফুল দিয়ে বেরিয়ে আসার পথে ধাক্কাধাক্কি, হইচই শুরু হয়। একপর্যায়ে কয়েকজন মিলে এক যুবককে সার্কিট হাউজের কম্পাউন্ডের বাইরে এনে পেটাতে দেখা যায়। তখন পাল্টাপাল্টি কিল, ঘুষি, হট্টগোলে সেখানকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এসময় উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপু এবং সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে দুই গ্রুপকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে দেখা যায়।
হাতাহাতি থামার পর এক তরুণকে আহত অবস্থায় হেঁটে চলে যেতে দেখা যায়। এসময় তরুণের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের জবাব দেননি।
এই ঘটনার সময় মন্ত্রী সার্কিট হাউজে আসা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ে ব্যস্ত ছিলেন।
জানতে চাইলে তানভীর হোসেন তপু সারাবাংলাকে বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে সার্কিট হাউজে মন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মন্ত্রী বের হওয়ার সময় ভিড়ের মধ্যে ফুল দিতে গিয়ে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়। এসময় কয়েকজন ছোট ভাই আর রাগ সামলাতে পারেনি। তখন সামান্য হাতাহাতি হয়েছে। আমরা দ্রুত তাদের সরিয়ে দিয়েছি।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার সারাবাংলাকে বলেন, ছাত্রলীগের জুনিয়র কয়েকজন ছেলের মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। আসলে মন্ত্রীকে বরণ করতে অনেক নেতাকর্মী, সমর্থক সার্কিট হাউজে গিয়েছিল। ভিড়ের মধ্যে সামান্য বিশৃঙ্খলা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
কিন্তু ঘটনাস্থলে থাকা কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, তিনি ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতি-মারামারি কিংবা বিশৃঙ্খলা কিছুই দেখেননি।
সার্কিট হাউজে দায়িত্বরত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, সার্কিট হাউজের মূল কম্পাউন্ডের বাইরে কয়েকজন ছেলেকে হাতাহাতি করতে দেখেছি। পরে আবার নিজেরাই হাতাহাতি থামিয়ে চলে গেছে। সার্কিট হাউজের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ/জেডএফ