Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ই-জুডিশিয়ারি ব্যবস্থা আসছে


১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:২৪

।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বিচারিক কার্যক্রমে গতি আনতে ই-জুডিশিয়ারি ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হচ্ছে। এ জন্য দীর্ঘদিন আগে হাতে নেওয়া উদ্যোগ এবার একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পেতে যাচ্ছে চূড়ান্ত পরিণতি। ই-জুডিশিয়ারি শীর্ষক এই প্রকল্পের আওতায় বিচারিক প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২ হাজার ২০৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিচারিক ব্যবস্থায় আইসিটির সক্ষমতা বাড়বে। প্রকল্পটির আওতায় ই-আদালত কক্ষ প্রতিষ্ঠা করে বিচার ব্যবস্থার জন্য প্রশাসনিক ও বিচার কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় করা হবে। এছাড়া বিচারক, সহায়তাকারী কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের আইসিটি জ্ঞান বাড়াতে সহায়তা করা সম্ভব হবে বলেও আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, আইন ও বিচার বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ৯ ডিসেম্বর জারি করা হয় সভার কার্যবিবরণী। পিইসি সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করে সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। সেটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

পিইসি সভার কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের আদালতগুলোতে প্রচুর মামলা অসম্পূর্ণ অবস্থায় আছে। এসব মামলার শুরু থেকে নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত অনেক ধাপ পার হতে হয় এবং এই ধাপগুলোও বেশ সময়সাপেক্ষ। কোনো নকল পেতে গেলেও প্রায় ২১ দিন সময় লেগে যায়। সীমিতসংখ্যক বিচারক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গতানুগতিক পদ্ধতির বিচার কার্যক্রম পরিচালনা ইত্যাদি কারণে যথাসময়ে বিচার কার্যক্রম শেষ করে রায় দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে তৈরি হয় ব্যাকলগ, যা দিন দিন বাড়ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বিচার কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী, গতিশীল স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার জন্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজেশন করা জরুরি। এ জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সহায়তা বাস্তবায়নের জন্য এ প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তাব করেছে আইন ও বিচার বিভাগ।

বিজ্ঞাপন

পিইসি সভায় বলা হয়, ২০১৬ সালের ১২ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পটি উপস্থাপিত হলে প্রকল্পটির উদ্যোগী মন্ত্রণালয় বিভাগ হিসেবে আইন ও বিচার বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। অবশ্য, আইন ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি জানান, একই প্রকল্পের দু’টি উদ্যোগী মন্ত্রণালয় থাকলে প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয়, বিশেষত প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন ব্যাহত হতে পারে।

আইন ও বিচার বিভাগের ওই প্রতিনিধি আরও জানান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ডাক টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের উদ্যোগী মন্ত্রণালয় ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা হবে আইন ও বিচার বিভাগ। এ ক্ষেত্রে বিসিসি থাকবে প্রকল্প বাস্তবায়নের কারিগরি সহায়তায়। সে হিসাবে বিসিসি’র কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পের উদ্যোগী মন্ত্রণালয় ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে আইন ও বিচার বিভাগকে রাখা হয়েছে।

সভায় আরও জানানো হয়, প্রকল্পে প্রস্তাবিত কার্যক্রম বাস্তবায়নে আইন ও বিচার বিভাগ ছাড়াও কারা অধিদফতর এবং আইসিটি বিভাগ সম্পৃক্ত। এ কারণে ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ওপর অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভায় আইসটি বিভাগ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রাওয়া সুপারিশের আলোকে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগের প্রতিনিধি জানান, প্রকল্পটি আইন ও বিচার বিভাগ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হওয়ায় আইসিটি বিভাগ থেকে পুনর্গঠিত ডিপিপি পাঠানো হয়নি। আইন ও বিচার বিভাগ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিপিপি পুনর্গঠন করেছে কি না— জানতে চাইলে আইন ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি জানান, প্রকল্পে প্রস্তাবিত উদ্যোগী মন্ত্রণালয় ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতায় সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে ডিপিপি পুনর্গঠন করে যথাসময়ে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো সম্ভব হয়নি।

এছাড়া ২০১৬ সালের ৭ জুলাই অনুষ্ঠিত একনেক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত ডিপিপিতে প্রতিফলিত হয়েছে কি না— সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আইন ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি জানান, উদ্যোগী মন্ত্রণালয় ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা সম্পর্কিত একনেক সিদ্ধান্ত আইসিটি বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে নিষ্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, দেশের প্রতিটি বড় জেলখানায় ভার্চুয়াল আদালত স্থাপন এবং আদালতে বিচারকদের কোর্টকে সিসিটিভি ক্যামেরায় আওতায় আনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রতিপালন করা হয়নি। এক্ষেত্রে বিশেষত জেলখানায় ভার্চুয়াল আদালত স্থাপনে একটি মাঝারি ধরনের কক্ষের প্রয়োজন হবে। সুরক্ষা সেবা বিভাগের প্রতিনিধি ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য কারা কর্তপক্ষ সম্পৃক্ত বলে মনে করেন। অবশেষে একনেক সভা ও এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো প্রতিফলন করে ডিপিপি পুনর্গঠন এবং একনেক সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সংক্রান্ত চেকলিস্ট ডিপিপিতে সংযোজনের বিষয়ে সভায় একমত প্রকাশ করা হয়।

সারাবাংলা/জেজে/একে

ই-জুডিশিয়ারি

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর