বরিশালে পন্টুন লস্করদের জ্বালানি তেল বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ
২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫১
।। এ এম জসিম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
বরিশাল: বরিশাল অঞ্চলে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অধীন পন্টুন লস্করদের জন্য বরাদ্দ জ্বালানি তেলের বিপরীতে কম টাকা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। লস্কররা বলছেন, প্রতিমাসে তাদের জন্য বরাদ্দ থাকে ১৮ লিটার তেল। সেই হিসাবে বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী তাদের ১১৭৫ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৮১০ টাকা। বছরের পর বছর ধরেই চলে আসছে এমন অনিয়ম।
লস্করদের অভিযোগ, বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ অফিসে তেলের ঠিকাদারের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে অফিস সহকারীর মাধ্যমে বরাদ্দের এই টাকা বিতরণ করা হয়ে থাকে। আর এতে জড়িত বিআইডব্লিউটিএ নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক রফিকুল ইসলামসহ অফিসের অন্যরাও। এ বিষয়ে পন্টুন লস্কররা প্রতিবাদ করলে হয়রানির শিকার হতে হয়। যদিও এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ অফিস থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল অঞ্চল অফিস সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল অঞ্চলে মোট ৭৯ জন পন্টুন লস্করকে রান্নার জন্য জ্বালানি হিসেবে প্রতিমাসে ১৮ লিটার করে কেরোসিন তেল বরাদ্দ করা আছে। এই তেলের বাজারমূল্য বর্তমানে ১১৭৫ টাকা হলেও লস্করদের দেওয়া হচ্ছে ৮১০ টাকা। অর্থাৎ, একেকজন লস্করকে ৩৬৫ টাকা করে কম দেওয়া হচ্ছে। সে হিসাবে ৭৯ জন পন্টুন লস্করের কাছ থেকে প্রতিমাসে ২৮ হাজার ৮৩৫ টাকা কেটে রাখা হচ্ছে।
পটুয়াখালীর কালাইয়া এলাকার একজন পন্টুন লস্কর বলেন, আমাদের কম টাকা নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। টাকা কম না নিতে চাইলে বিভিন্ন ধরনের দাফতরিক শাস্তির ভয় দেখানো হয়। যার কারণে বাধ্য হয়ে কম টাকা নিয়ে থাকি।
বাবুগঞ্জ এলাকার একজন পন্টুন লস্কর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তেলের জন্য একেকজনকে ৩৬৫ টাকা করে কম দেওয়া হয়। আবার টাকা না নিয়ে তেল নিতে চাইলে ৩ লিটার করে তেল কম দেয়। আমরা অনেক বলেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেলের ঠিকাদার মেসার্স আবাহনী ট্রেডার্সের মালিক আমীর হোসেন তালুকদার সারাবাংলাকে বলেন, কর্মচারী ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা তেল ও টাকা দিয়ে থাকি। এ বিষয়ে লস্করদের কোনো অভিযোগ থাকলে তারা বিআইডব্লিউটিএ অফিসে গিয়ে জানাতে পারেন।
অফিসে বসে লস্করদের মধ্যে টাকা বিতরণের সময় বিআইডব্লিউটিএ’র অফিস সহকারী মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, অনেকে তেল নিতে চান না। সে কারণে তাদের টাকা দেওয়া হয়। তবে বরাদ্দের তুলনায় টাকা কম দেওয়া এবং তেলের এজেন্সির বদলে বিআইডব্লিউটিএ অফিসে তার মাধ্যমে টাকা বিতরণের বিষয়ে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে এড়িয়ে যান তিনি এবং দ্রুত অফিস ত্যাগ করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তেলের স্লিপে সই করা বিআইডব্লিউটিএ নৌ সংরক্ষন ও পরিচালন বিভাগের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, আমি তেলের স্লিপে সই করে দেই। তেলের পরিবর্তে টাকা দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
সারাবাংলা/টিআর/এসএন