Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ট্রাক উল্টে শ্রমিকদের ঘরে, প্রাণ গেল ঘুমন্ত ১৩ শ্রমিকের


২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৮:৫১

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

কুমিল্লা: চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে একটি ইটভাটায় শ্রমিকদের থাকার ঘরে কয়লাবাহী ট্রাক উল্টে পড়েছে। এতে ওই ছাউনিতে থাকা ১৩ শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুই জন। শ্রমিকদের সবার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়।

শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) ভোরে গোলপাশা ইউনিয়নের নারায়ণপুরের ইমরান ব্রিক ফিল্ডে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতের শিকার সবাই ওই ইটভাটার শ্রমিক। দুর্ঘটনার সময় তারা সবাই ঘুমে ছিলেন।

আরও পড়ুন- কুমিল্লায় প্রাণ হারানো শ্রমিকদের বাড়িতে বাড়িতে আহাজারি

হাইওয়ে মিয়াবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মঞ্জুরুল হক জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ওই ইটভাটার জন্য কয়লা নিয়ে একটি ট্রাক ইটভাটায় পৌঁছায়। কয়লা আনলোড করার সময় ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইটভাটায় শ্রমিকদের থাকার ঘরের ওপর উল্টে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, নিহত শ্রমিকদের মধ্যে ১০ জনই সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং একই বাড়ির সাত জন। নিহতরা হলেন— জলডাকার নিজপাড়া গ্রামের সুরেশচন্দ্র রায়ের ছেলে রঞ্জিত চন্দ্র রায় (৩০), মানিক চন্দ্র রায়ের ছেলে তরুণ চন্দ্র রায় (২৫), কৃষর চন্দ্র রায়ের ছেলে সংকর চন্দ্র রায় (২২), অমল চন্দ্র রায়ের ছেলে দিপু চন্দ্র রায় (১৯) ও কামাক্ষা রায়ের ছেলে অমিত চন্দ্র রায় (২০); উপজেলার পাঠানপাড়া গ্রামের নূর আলমের ছেলে মো. মোরচালিন (১৮), ফজলুল করিমের ছেলে মো. মাসুম (১৮), জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. সেলিম (২৮) ও রামপ্রসাদের ছেলে বিল্লব (১৯); উপজেলার শিমুল বাড়ি গ্রামের মনোরঞ্জন রায় (১৯) ও দিনেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে মিনাল চন্দ্র রায় (২১) এবং রাজবাড়ি গ্রামের খোকা চন্দ্র রায়ের ছেলে বিকাশ চন্দ্র রায় (২৮) ও ধলু রায়ের ছেলে কনক চন্দ্র রায় (৩৪)।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, রাতে কাজ শেষে ইটভাটার ওই ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন নীলফামারীর জলঢাকা থেকে আসা ১৫ শ্রমিক। ঘরটি ছিল ভাটার কয়লা স্তূপের পাশেই। এদিকে ওই ইটভাটার জন্য কয়লা নিয়ে আসা হয়েছিল ট্রাকটিতে করে। ট্রাকটি পৌঁছানোর পর কয়লা নামানোর জন্য স্তূপের দিকে ব্যাক গিয়ারে যাওয়ার সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। এসময় কয়লা স্তূপের পাশে শ্রমিকদের ঘরটির ওপর উল্টে পড়ে ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ১২ শ্রমিক। আহত হন বাকি দুই জন। তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

চৌদ্দগ্রাম থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ইনজামামউল হক সারাবাংলাকে দুর্ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, চৌদ্দগ্রাম থানা, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করছে। চালক ও হেলপার পালাতক রয়েছে।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক নিহত শ্রমিকের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন। ওই ইটভাটার মালিকও প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে জানান।

কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।

সারাবাংলা/টিআর

১৩ জনের মৃত্যু কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর