Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাপাতে চাপা অস্বস্তি!


১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:০৭

।।  আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলে স্থান পাওয়া জাতীয় পার্টিতে (জাপা) চাপা অস্বস্তি বিরাজ করছে। দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতার ভাষ্য, গত ৫ বছর জাপা একইসঙ্গে সরকারের মন্ত্রিসভা ও বিরোধী দলে থাকার পর সংগঠনি কার্যক্রম আগেই স্থবির হয়ে পড়েছিল।  পাশাপাশি নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে এবারের নির্বাচনে ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়টি। জাপার কয়েকজন শীর্ষ নেতা বলছেন, এসব কারণে দলের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে।  আর এই অস্বস্তি-হতাশার কারণে দলের শীর্ষ নেতাদের ওপর থেকেও আস্থা হারিয়ে ফেলছেন মধ্যম সারি থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

দলীয় নেতাকর্মীদের মতে, এরশাদের অনুপস্থিতিতে নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব পেলেও দলকে চাঙ্গা করে রাখা সহজ হবে না।  দলকে গতিশীল করতে কেন্দ্রীয়ভাবে বর্ধিত সভা করে জাপার নেতৃত্বে পরিবর্তন আনাসহ কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো  বলেছে, একাদশ নির্বাচনের পর  ও দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের অসুস্থতা ও মহাসচিব পরিবর্তনের পর থেকে দলটির সার্বিক কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।  নেতাকর্মীরা হয়ে পড়েছেন হতাশ।  তারা এখন দলছুট হওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।  আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে আসার পর তার শারীরিক অবস্থা বুঝে  তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও  একটি সূত্র  আভাস দিয়েছে।

দলটির একাধিক সূত্র বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ১৪৮ জন প্রার্থী উন্মুক্তভাবে নির্বাচন করে জয়লাভ করতে না পেরে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আর যোগযোগ রাখছেন না। এসব প্রার্থী এখন বিকল্পধারা (যুক্তফ্রন্ট) ও গণফোরামে যোগ দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: সংসদে ‘সাদাকে সাদা, কালোকে কালো’ বলবে জাপা

দলের পরাজিত একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নির্বাচনের সময় তারা দল থেকে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাননি। বরং নির্বাচনের সময় মহাজোটের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার জন্য তাদের ওপর কেন্দ্রীয় নেতারা চাপ সৃষ্টি করেছেন।  তাদের অভিযোগ, জাপার শীর্ষ নেতারা শুধু মনোনয়নবাণিজ্য করতে রাজনীতি করছেন।  ফলে এ দলের রাজনীতি করে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে না।

ঢাক মহানগর জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানায়, দলটির ঢাকা মহানগর কমিটিগুলো নামকাওয়াস্তে রয়েছে।  আর জেলা কমিটিগুলো চলছে যেনতেনভাবে। ৩০টি জেলায় সম্মেলন বাকি। বাকিগুলো সম্মেলন হলেও সেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি আজও।

এসব বিষয় নিয়ে দলটির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য তার নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ অসুস্থ।  দলের হাল ধরবেন কে? জিএম কাদের জাতীয় পার্টি পরিচালনায় নেতাকর্মীদের ভরসা নেই। ফলে দলটি একেবারে শেষ না হয়ে মুসলীম লীগের মতো হয়তো কিছুটা টিকে থাকবে। তিনি বলেন, ৩৫ বছর এই দলটির সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি।  কাছ থেকে দেখলাম, আসলে দলটির কোনো নীতি নেই।

জাপার এই নেতা বলেন, ‘দলটির নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে তুলতে কেন্দ্রীয়ভাবে বর্ধিত সভা ও কেন্দ্রীয়ভাবে সম্মেলন করা হতে পারে।’

এসব বিষয় নিয়ে জাতীয় পার্টির ঢাকা মহনগরের সভাপতি জহিরুল আলম রুবেল বলেন, ‘নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টিও সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক।  নির্বাচনের পর  কেন উন্মুক্ত প্রার্থীরা জয়লাভ করতে পারেনি, সে বিষয় কোনো আলোচনা নেই। ’ এছাড়া সাংগঠনিক কার্যক্রম বর্তমানে একেবারে নেই বললেই চলে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমএনএইচ

জাপা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর