Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কেমিক্যাল গোডাউন আছে’-২৪ ঘণ্টায় কল সেন্টারে ১৬ অভিযোগ


২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:৪১

।। উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল গোডাউনের সন্ধান পাওয়া মাত্র অভিযোগ জানাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কল সেন্টার খুলেছে। গতকাল মেয়র সাইদ খোকনের এমন নির্দেশনা দেওয়ার পর গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে ডিএসসিসির দেওয়া কল সেন্টার (০২৯৫৫৬০১৪) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সেন্টারের অপারেটর আলমগীর কবির সুমন সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এরইমধ্যে কল সেন্টার থেকে কর্তৃপক্ষকে এসব তথ্য জানিয়ে চিঠিও ইস্যু করা হয়েছে।

                                             আরও পড়ুনচকবাজারে আগুনের ঘটনায় পুলিশের মামলা

তিনি বলেন, ‘গতকাল দুপুরের দিকে এই নম্বরটি অভিযোগ নেওয়ার জন্য খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু রাত ১০টা পর্যন্ত কোনো অভিযোগের কল আসেনি। রাত ১০টার পর থেকে দুই-একটি কল আসে। আর বেশিরভাগ অভিযোগের জন্য কল আসে রোববার সকাল থেকে দুপুরে। এখন পর্যন্ত মোট ১৬টি অভিযোগ এসেছে।’

                                   আরও পড়ৃন:আগুন, বিস্ফোরণ: চুড়িহাট্টায় উড়ছে কত কথা

যে অভিযোগগুলো আসছে তার বেশিরভাগই পুরান ঢাকাকেন্দ্রিক উল্লেখ করে সুমন জানান, এর বাইরে মিরপুরে একটি ও গুলশানের একটি অভিযোগ এসেছে। এ দুটি অভিযোগ সঙ্গে সঙ্গে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষের কল সেন্টারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর পুরান ঢাকাকেন্দ্রিক যে অভিযোগ আসছে তা চিঠি আকারে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এখন ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে বড় কর্মকর্তাদের ওপর।

অভিযোগগুলো কেমন ছিল জানতে চাইলে সুমন বলেন, ‘বাসা-বাড়িতে কেমিক্যালের গোডাউন আছে এমন তথ্যই বেশিরভাগই জানাচ্ছেন। তার কাছ থেকে গোডাউনের মালিক ও ভবন মালিকের ঠিকানা নেওয়া হচ্ছে। তবে অভিযোগকারীর কোনো পরিচয় ও ঠিকানা নেওয়া হচ্ছে না।’

                            আরও পড়ুন: চকবাজারে আগুন: ঘটনা তদন্তে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ১২ সদস্যের কমিটি

এর আগে গতকাল মেয়র সাইদ খোকন চকবাজারে চুড়িহাট্টা এলাকায় গিয়ে বলেন, “পুরান ঢাকার কোনো এলাকায় কেমিক্যাল সামগ্রী দেখলেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ফোন দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ যদি কেউ গোডাউনে কেমিক্যাল স্টোর করতে দেখেন বা কেমিকেল রাখতে দেখেন আপনারা আমাদের কন্ট্রোল রুম ‘৯৫৫৬০১৪’ নম্বরে ফোন করে জানান।”

মেয়র বলেন, ‘যদি কেউ যদি তার বাড়ির আশপাশে পাড়া-মহলায় কেমিক্যাল রাখছে এমন দৃশ্য দেখেন তাহলে আমাদের কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কন্ট্রোল রুম, কাউন্সিলর অফিস, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জানান। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কল সেন্টারে পাওয়া অভিযোগগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘আগামীকাল অভিযানের বিষয়ে সব স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে বৈঠক আছে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যেসব অভিযোগ আসছে সেগুলো কিভাবে সমাধান করা হবে। একা তো অভিযান করা যাবে না। এখানে পুলিশ ও র‌্যাব লাগবে, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ লাগবে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি লাগবে, বিএসটিআইসহ আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করেই অভিযানে নামতে হবে।’ তাই কল সেন্টারে অভিযোগ এলেও সেগুলো নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান জনসংযোগ কর্মকর্তা।

২০১০ সালেও নিমতলী ঘটনার পর সরকার পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণের বিষয়ে বেশ তৎপর হয়ে ওঠে। ওই সময় গঠিত তদন্ত কমিটি সরকারি হিসেবে প্রায় ৮ হাজার কেমিক্যাল গোডাউন অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য সুপারিশও করেছিল। কিন্তু কি কারণে সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায় তা কেউ বলতে পারেনি। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করে বলেছেন, ‘কেমিক্যাল গোডাউন না সরানোটা দুঃখজনক ব্যাপার।’ তবে এবার কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, কেমিক্যাল গোডাউনে বিস্ফোরণে গত বুধবার রাতে (২০ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকায় ভয়াবহ আগুন লাগে। সেখানকার ওয়াহেদ ম্যানসনের দ্বিতীয় তলায় থাকা গোডাউনের বিস্ফোরণে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট প্রায় ১৬ ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। উদ্ধার করা হয় ৬৭টি লাশ।

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

আরও পড়ুন

চকবাজারে আগুন: গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সংকটে বেড়েছে দুর্ভোগ

চকবাজারে আগুন: ৪৭ জনের লাশ হস্তান্তর

চকবাজারে আগুন: জাতিসংঘ মহাসচিবের শোক, সহায়তার আশ্বাস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর