Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বায়ু দূষণে শীর্ষে বাংলাদেশ, রাজধানী হিসেবে ঢাকা দ্বিতীয়


৫ মার্চ ২০১৯ ২০:০১

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বায়ু দূষণের হিসাবে ২০১৮ সালে বিশ্বের সব দেশের মধ্যে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। এর পরের দুই স্থানেই রয়েছে যথাক্রমে পাকিস্তান ও ভারত। অন্যদিকে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর রাজধানী হিসেবে শীর্ষে স্থান পেয়েছে ভারতের নয়াদিল্লি। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে ঢাকা। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বায়ুর মান যাচাইকারী সবচেয়ে বড় ডাটাবেজ আইকিউ এয়ার এয়ার ভিজ্যুয়ালের ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এয়ার কোয়ালিটি গাইডলাইন ও ইউনাইটেড স্টেটস এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক (ইউএস একিউআই) অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন।

প্রতিবেদনটি তৈরিতে বায়ু দূষণের মাত্রা পরিমাপে ব্যবহার করা হয়েছে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা বা পার্টিকুলেট ম্যাটারের (পিএম) উপস্থিতির হারকে। ২.৫ মাইক্রন বা তার চেয়ে বড় আকারের ধূলিকণার (পিএম২.৫) উপস্থিতির পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত মাত্রার সঙ্গে তুলনা করে তৈরি হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও রাজধানীর র‌্যাংকিং।

আইকিউএয়ার এয়ার ভিজ্যুয়ালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের তালিকায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের বাতাসে পিএম২.৫-এর মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৯৭.১ মাইক্রোগ্রাম। দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তানে এর পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে ৭৪.৩ মাইক্রোগ্রাম ও ভারতের ৭২.৫ মাইক্রোগ্রাম। শীর্ষ দশে থাকা বাকি দেশগুলো হলো— আফগানিস্তান (৬১.৮), বাহরাইন (৫৯.৮), মঙ্গোলিয়া (৫৮.৫), কুয়েত (৫৬.০), নেপাল (৫৪.২), সংযুক্ত আরব আমিরাত (৪৯.৯) ও নাইজেরিয়া (৪৪.৮)।

অন্যদিকে, বাতাসে পিএম২.৫-এর উপস্থিতির পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত প্রতি ঘনমিটারে ১০ মাইক্রোগ্রামের নিচে রয়েছে মাত্র ১১টি দেশ। এগুলো হলো— আইসল্যান্ড (৫.০), ফিনল্যান্ড (৬.৬), অস্ট্রেলিয়া (৬.৮), এস্তোনিয়া (৭.২), সুইডেন (৭.৪), নরওয়ে (৭.৬), নিউজিল্যান্ড (৭.৭), কানাডা (৭.৯), যুক্তরাষ্ট্র (৯.০), পর্তুগাল (৯.৪) ও আয়ারল্যান্ড (৯.৫)।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, দেশ হিসেবে বায়ু দূষণে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানে থাকলেও রাজধানী হিসেবে শীর্ষে রয়েছে ভারতের নয়াদিল্লি। শহরটিতে বাতাসে পিএম২.৫ রয়েছে প্রতি ঘনমিটারে ১১৩.৫ মাইক্রোগ্রাম। এর পরের অবস্থানেই থাকা ঢাকায় এর পরিমাণ ৯৭.১ মাইক্রোগ্রাম। এরপরই রয়েছে আফগানিস্তানের কাবুল (৬১.৮)। শীর্ষ দশের বাকি রাজধানীগুলো হলো— বাহরাইনের মানামা (৫৯.৮), মঙ্গোলিয়ার উলান বাটার (৫৮.৮), কুয়েতের কুয়েত সিটি (৫৬.০), নেপালের কাঠমান্ডু (৫৪.৪), চীনের বেইজিং (৫০.৯), সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি (৪৮.৮) ও ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা (৪৫.৩)।

আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে কম পিএম২.৫-এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে মাত্র ৯টি রাজধানীতে। এগুলো হলো— নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন (৬.০), কানাডার অটোয়া (৬.০), সুইডেনের স্টকহোম (৬.৬), এস্তোনিয়ার তাল্লিন (৭.১), ফিনল্যান্ডের হেলসিংকি (৭.২), নরওয়ের অসলো (৮.২), যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি (৯.২), আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন (৯.৫) ও স্পেনের মাদ্রিদ (৯.৯)।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণকারী উপাদানগুলোর মধ্যে পিএম২.৫ উপাদানগুলোর স্বাস্থ্য ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বলে স্বীকৃত। ক্ষুদ্রাকৃতির কারণে এই উপাদানগুলো খুব সহজেই মানুষের শ্বসনতন্ত্রের খুব গভীরে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে মানবদেহ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়। দূষিত শহরগুলোতে মানুষের আয়ু কমে যাওয়া ও অকাল মৃত্যুর পেছনেও ভূমিকা রাখছে এই উপাদানগুলো।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বায়ু দূষণকারী উপাদানগুলোর মধ্যে পিএম২.৫ গোটা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষকে আক্রান্ত করে। এর উৎসগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই মানবসৃষ্ট। বিভিন্ন যানবাহনের ইঞ্জিন, শিল্প কারখানা এবং কাঠ ও কয়লা পোড়ানোর মাধ্যমে এগুলো বেশি নির্গত হয়। অন্যান্য বায়ু দূষণকারী উপাদানগুলো বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন বিক্রিয়া করলেও এসব উপাদান নির্গত হয়।

বিজ্ঞাপন

এয়ার ভিজ্যুয়ালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বায়ু দূষণ এখন স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় পরিবেশগত ঝুঁকি। এর ফলে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৭০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে। অকালমৃত্যুর জন্য বায়ু দূষণ এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম কারণ। সারাবিশ্বে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে খরচ হচ্ছে ২৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার, যা বিশ্ব অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলছে।

সারাবাংলা/এইচএ/টিআর

বায়ু দূষণ বায়ু দূষণে রাজধানী হিসেবে দ্বিতীয় ঢাকা বায়ু দূষণে শীর্ষে বাংলাদেশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর